কারি পাতার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা

সবার কাছে নিমপাতা পরিচিত। একই সঙ্গে নিম পাতার গুণাবলীর সম্পর্কে ও সবার ধারণা রয়েছে। যে নিমপাতা আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী। শুধু যে শরীরের জন্য তা নয় এটি চুলের জন্য খুব উপকারি। তেমনি এক ধরনের পাতা হল কারি পাতা। এটিও অনেকটা নিমপাতার কাজ করে থাকে। 

এটিও শরীরের পাশাপাশি চুলের জন্য খুব উপকারে। অনেকে এটিকে মিষ্টি নিম পাতা বলে থাকেন। কারি পাতার বৈজ্ঞানিক নাম হল (Murraya Koenigii)। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে কারি পাতার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

কারি পাতার পুষ্টিগুণঃ

 কারি পাতা বহু পুষ্টিগণে ভরপুর। কারি পাতায় রয়েছে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম ফসফরাস নিকোটিনিক এসিডের উৎস ইত্যাদি। এ পাতা যদি আমরা খেতে পারি তাহলে এটি শরীরের জন্য অনেক উপকারে। এটিকে অনেকে রান্না করে খেতে না চাইলে কাঁচায় এর পাতা চিবিয়ে খাওয়া যায়। মূলত রান্না করার থেকে কাঁচা চিবিয়ে খাওয়ায় ভালো। কাঁচা চিবিয়ে না খেলে এটি শাক-সবজি, সালাত ইত্যাদি সাথে যোগ করে খেতে পারেন।

কারি পাতার উপকারিতাঃ

কারিপাতার তার পুষ্টি গুণের জন্য অধিক উপকারি। এটি আমাদের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। এটি চুলের জন্য খুব উপকারি। কারি পাতাকে আমাদের চুলের জন্যও উপকারী। আবার এগিয়ে রান্নায় একটি সুন্দর গন্ধ সৃষ্টি করে যা রান্নার সাত বাড়ি তোলে।

ওজন কমাতে

কারি পাতা যদি রোজ সকালে খালি পেটে খাওয়া যায়। তাহলে এর একটি অন্যতম উপকারিতা পাওয়া যায় সেটি হল ওজন কমানো। আজকাল হয়তো অনেকে ওজন বাড়ার সমস্যায় ভুগছেন। তাদের জন্য কারি পাতা খুবই উপকারী। রোজ সকালে এটি খাওয়ার ফলে পেটের চর্বি কমে যায়। আর চর্বি কমে যাওয়ার ফলে ওজন কমে যায়। চর্বি কমে যাওয়ার কারণ এই পাতায় এক ধরনের তেতো ভাব থাকে। আর এ কারণেই এটি চর্বি কমতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারি

এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী কারণ, ডায়াবেটিস রোগীদের চিনি খাওয়া বারণ। আর এ কারি পাতার শরীরের চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। আর এতে রয়েছে ফাইবার যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অনেক উপকারি

এসিডিটি দূর করে

আজকাল অনেকে এসিডিটির সমস্যায় ভুগছেন। তাদের জন্য কারি পাতা খাওয়াটা খুব উপকারি। এটি প্রতিদিন সকালে যদি খালি পেটে খাওয়া যায় তাহলে এসিডিটি দূর করতে সাহায্য করে। কারি পাতা কি এসিডিটি দূর করে। কারি পাতার এই তেতো ভাবের জন্য পেটে কৃমি দূর করতে সাহায্য করে।

চোখের দৃষ্টির জন্য অনেক উপকারী

পাতার চোখের দৃষ্টি ভালো রাখার জন্য অনেক উপকারী। কারণ মস্তিষ্ককে সবসময় সজাগ রাখতে কারি পাতা অবদান অন্যতম। আমরা জানি ভিটামিন এ আমাদের চোখের জন্য কতটা উপকারী। আর সেটা যদি প্রাকৃতিক কোন খাবারের মধ্যে পাওয়া যায় সেটি আরো উপকারী। রয়েছে ভিটামিন এ। যা আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে।

হার্ট এর বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে

কারি পাতার রস হার্টের জন্য অনেক ভালো। কারণ এটা হার্টের বিভিন্ন ধরনের প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এটিতে এমন কিছু উপাদান আছে যা আমাদের হার্ট কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

চুল গজাতে দিনে কয়টা কারি পাতা খাওয়া উচিত

এই পর্বে আমরা আলোচনা করব চুল বাজাতে দিনে কয়টা করে কারি পাতা খাওয়া উচিত। যাদের চুল পড়ার সমস্যা আছে তারা আজকের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কারি পাতা মিলালিনের প্রাকৃতিক উপাদান বাড়ায় যার ফলে এটি চুলকে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি দেয়। প্রতিদিন কমপক্ষে ১২ থেকে ১৫ টাকা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ব্লেন্ডার করে চলে লাগাতে পারেন। এটি নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।

কারি পাতা খাওয়ার নিয়মঃ

কারি পাতা অনেক পুষ্টি গুনে ভরপুর। তাই আমরা যদি কারে পাতা খাই তাহলে এটি আমাদের শরীর সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে । আমরা কারি পাতা বিভিন্ন উপায়ে খেতে পারি যেমনঃ

১। এদিকে রান্নার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

২। আবার এটিকে কাঁচা ও খাওয়া যায়। 

৩। কারি পাতা পিষে এর রসও খাওয়া যায়।

৪। এটাতে শুধু খাবার হিসেবে ব্যবহার হয় তা কিন্তু নয়। কারে পাতার চুলের জন্য অনেক উপকারি। তাই কারি পাতা বেটে চলে দেওয়া যায়।

৫। এসব কারি পাতার চা ও খাওয়া যায়।

৬। কারি পাতার রোদে শুকিয়ে এর বুড়ো করে পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়।

৭। এ পাতা পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে, এই পানি দিয়ে গোসল করলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের দুর্গন্ধ দূর হয়। অতিরিক্ত ঘাম হতে মুক্তি দেয়। 

কারি পাতার অপকারিতাঃ

প্রত্যেকটি জিনিসের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন তাদের অপকারিতাও রয়েছে। আমাদের আগে থেকে এসব বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরী।কারি পাতা আমাদের জন্য অনেক উপকারী। কিন্তু যখন এটি বেশি পরিমাণে খাওয়া হয় , তখন এটি শরীরের উপর উল্টো প্রভাব ফেলতে শুরু করে।  হজমের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে দেখা যায়। তাই কারি পাতা পরিমাণ মতো হওয়া উচিত।

শেষ কথা

আমরা এতক্ষণে জেনে নিয়েছি কারি পাতার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা সম্পর্কে। আশা করছি আজকের এই পর্বটি আপনাদের অনেক উপকার লাগবে। তারপরও যদি আজকের এই আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার কোন মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url