আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস

আমরা যে এক ধরনের কাজ করি না কেন, সব কাজে আমাদের নিজস্ব আত্মবিশ্বাস প্রয়োজন। কারণ আমরা যদি নিজেদের প্রতি বিশ্বাসই না রাখতে পারি তাহলে সে কাজ আমরা কি করে করতে পারব। তাই যেকোনো ধরনের কাজ করার আগে অবশ্যই আমাদের আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। মানুষ আত্মবিশেষের জোরে আজ পর্যন্ত অনেক কিছু করে দেখিয়েছে। তাই জীবনের সফল হতে গেলেও আত্মবিশ্বাসের অনেক প্রয়োজন রয়েছে।
আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস


ব্যর্থতার জন্য পিছিয়ে থাকলে হবে না, আত্মবিশ্বাসের জোরে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। এখন কথা হল আমরা কি করে নিজেদের এত আত্মবিশ্বাস বাড়াবো। আমরা যদি নিজেদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে চাই তাহলে, কিছু উপায় রয়েছেন। যেগুলোকে কাজে লাগিয়ে আমরা খুব সহজে আমাদের আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তুলতে পারবো।

ভূমিকা

আমাদের আত্মবিশ্বাসকে বাড়ানো প্রয়োজন কারণ, যখন আমরা কোন কাজ করতে যায় তখন আমাদের মাথায় বিভিন্ন ধরনের চিন্তাভাবনা আসে যেমনঃ আমি কি কাজটা ভালো করে করতে পারব, আমি কি এই কাজটি করার যোগ্য, আশেপাশের মানুষ আমার কাজ  দেখে কি বলবে। এরকম হাজারো চিন্তাভাবনা আমাদের মাথায় আসে। 

অনেক সময় এই চিন্তা ভাবনা গুলোর জন্য আমরা আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলি,আর এই জিনিসটি আমাদের কাজের উপর প্রভাব ফেলে। তাই যে কোন কাজ করতে গেলে অবশ্যই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করতে হবে। তাই আজ আমরা আলোচনা করব আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর পাঁচটি উপায় সম্পর্কে. যদি আপনি আত্মবিশ্বাস বাড়াতে চান তাহলে আজকের এই পর্বটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়বেন। চলুন নিচে বিস্তারিত আলোচনা জেনে নেই।

আত্মবিশ্বাস কি

আত্মবিশ্বাস হলো নিজের ক্ষমতা, সামর্থ্য এবং সাফল্যের বিশ্বাস রাখা। এটি আপনাকে আগামীতে কাজ করতে, সম্পন্ন হতে এবং জীবনের মূল্যবান লক্ষ্যগুলি অর্জন করতে সহায়ক হয়। আত্মবিশ্বাস আপনাকে মানসিকভাবে সমৃদ্ধ এবং নিজেকে নির্ভরযোগ্য অনুভব করতে সাহায্য করে। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন।

১.আত্মবিশ্বাস কেন কমে যাচ্ছে?

আমাদের কোন কাজের সমাধান করতে হলে অবশ্যই প্রশ্ন সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা থাকতে হবে। আমরা যদি প্রশ্নটা না জানি তাহলে সেটার উত্তর কি করে করব। তাই কোন কিছু করার আগে অবশ্যই আমাদের প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। এখন আপনি যদি আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে চান তাহলে অবশ্যই আত্মবিশ্বাস অভাব কেন হচ্ছে সেটা সম্পর্কে জানতে হবে। 

আপনি যদি সে বিষয়টি জানতে পারেন তবেই তো সমাধান করতে পারবেন। আপনাকে আগে সে পয়েন্টটি খুঁজে বের করতে হবে যে কারণে আপনার আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা দিচ্ছে। সে পয়েন্ট যদি আপনি খুজে বের করতে পারেন তাহলে, সেই বিষয়ে সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকবে। এবং যে ভুলগুলোর কারণে আপনার আত্মবিশ্বাস কম হয়ে যাচ্ছে। 

সে ভুলগুলো আর হবে না তাই আপনার আত্মবিশ্বাসের যে কমতি ছিল সে কমতিটা কমে যাবে। তাই সবার প্রথমে আপনার কারণটা খুঁজে বের করতে হবে। আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়ার কারণটা জানা অনেক জরুরী। একমাত্র এটার মাধ্যমে আপনি আপনার আত্মবিশ্বাসকে আরো বাড়ি তুলতে পারবেন।

২.যে কারণে আত্মবিশ্বাস কমে যাচ্ছে সে কাজটা ভালো করে করার চেষ্টা করা

এতক্ষণ আমরা জানলাম যে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য সর্বপ্রথম আমাদের জানতে হবে কারণ। এখন আমরা যদি কারণটা জেনে যাই তাহলে, কিভাবে সে কারণটার সমাধান করব সেটা কেউ তো অবশ্যই জানতে হবে তাই না? তাই কারণটা জানার পাশাপাশি কিভাবে সে সমস্যার সমাধানটা করতে পারব সেটা কেউ জানতে হবে। ধরুন একটা উদাহরণ দাও যাকঃ আপনার ক্লাসের যে টপার গুলো রয়েছে তারা ইংলিশে খুব ভালো কথা বলতে পারে। 

এজন্য টিচার যখন তাদের প্রশ্ন করে তারা আত্মবিশেষের সাথে সে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। এখন ধরুন আপনার ইংলিশে নলেজ একটু কম রয়েছে। অর্থাৎ আপনি ইংলিশে কথা বলতে জানেন কিন্তু ভালো করে নয়। এতে করে কি হলো স্যার যদি আপনাকে কোন কোশ্চেন করে তাহলে, আপনি টপরদের মতো করে কখনো সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন না। আপনার যদি জানা থাকে আপনি তাও সে উত্তর দিতে পারবেন না।

কারণ ওই যে আপনার আত্মবিশ্বাসের কমিটি রয়েছে। আত্মবিশ্বাস ঠিক এভাবে আমাদের কাজে বাধাগ্রস্ত করে। তাই কারণটা জানার পাশাপাশি সেটাকে কিভাবে সমাধান করা যায় সেটা সম্পর্কে জানতে হবে। এখন ধরুন আপনার যে ইংলিশে কম নলেজ রয়েছে তাহলে, ইংলিশ স্পিকিং স্কিল গুলোকে ভালো করতে হবে। 

এজন্য আপনি বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারেন যেমনঃ ফ্রেন্ডের সাথে ইংলিশে কথোপকথন করে প্র্যাকটিস করতে পারেন কিংবা ভালো কোন শিক্ষকের কাছে ইংলিশ বিষয়ে ভালো ধারণা নিতে পারেন। এতে করে কি হল আপনার আত্মবিশ্বাসটা বেড়ে যাবে যে আপনিও টপার দের মত ইংলিশে ভালো কথা বলতে পারেন। তাহলে আপনিও ক্লাসে টপার দের মধ্যে একজন সদস্য হয়ে যাবেন।

৩.কিছু মানুষ খুঁজে বের করা, যারা আপনাকে সাহায্য করতে পারবে

এর পয়েন্টটা কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনার আত্মবিশ্বাস নিজে নিজে বাড়ানোর পাশাপাশি কিছু মানুষকেও প্রয়োজন। কারণ তারা আপনার বিভিন্ন কাজে সাহায্য করতে পারে। যেটি আপনার আত্মবিশ্বাস অনেক সহজে বাড়িয়ে দিতে পারবে। আপনাকে এমন মানুষ বেছে নেওয়া প্রয়োজন যারা, আপনার যে বিষয়ে উইকনেস রয়েছে সে বিষয়ে পারদর্শী। তাই আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে যে কারণে, সে বিষয়ে পারদর্শী কাউকে খুঁজে বের করতে হবে। যে আপনাকে সেই কাজে অনেক সাহায্য করতে পারে। 

যেমন ধরুন আপনি যে, ইংলিশে ভালো করে কথা বলতে পারেন না আপনি একজন ভালো শিক্ষক বেছে নিতে পারেন। যে আপনাকে ইংলিশ বিষয়ে সকল ধারনা এবং ইংলিশে কিভাবে কথা বলতে হয় সেটা শিখিয়ে দিবে। তাই আপনার যে কারণে আত্মবিশ্বাসের কোনটি রয়েছে, সে কারণে যে মানুষটি পারদর্শী তাকে বেছে নিতে হবে। 

এরপর তার কাছ থেকে সেই বিষয়ে আরো বেশি করে জানতে হবে এবং আপনার কোন কোন জায়গাতে ভুল হচ্ছে সেই জায়গাগুলো কেউ চিহ্নিত করতে হবে। এতে করে আপনার ভুলগুলো ধরা পড়বে এবং আপনার আত্মবিশ্বাস ও আরো বাড়তে থাকবে। তাই এত বিশেষ বাড়ানোর জন্য একজন সঠিক মানুষের নির্বাচন করাও কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের নিজের সব কাজ নিজেরাই করতে পারলেও। মাঝে মাঝে কিছু মানুষের প্রয়োজন হয়। যা সত্যি আমাদের কাজে অনেক সাহায্য করতে পারে। যে মানুষটি আপনার জড়তা কমিয়ে দিতে সাহায্য করবে।

 ৪.পজিটিভ চিন্তাভাবনা করা

ধরুন আপনি কোন কাজ করতে যাচ্ছেন, কিন্তু আপনার মনে হচ্ছে আপনিও তো সেই কাজটা ভালো করে পড়তে পারবেন না। কিংবা আপনি সে কাজে বেশি পারদর্শী নন। কোন কাজে আমাদের মাথায় এমন বিভিন্ন ধরনের চিন্তাভাবনা আসে। যেটি আমাদের কাজে বাধাগ্রস্ত হয়ে যায়। তাই কোন কিছু করার আগে চিন্তা ভাবনা কিন্তু কখনোই ভালো নয়। 

চিন্তা ভাবনা আপনার আত্মবিশ্বাস কেউ কিন্তু নষ্ট করে দিতে পারে। তাই অন্যান্য কোন কাজ সম্পর্কে বেশি বেশি ভেবে কোন লাভ নেই শুধু সময় নষ্ট ছাড়া। তাই যখনই আপনি কোন কাজ করতে চাচ্ছেন সে বিষয়ে যদি আপনি আগে থেকে পজিটিভ চিন্তাভাবনা মাথায় ঢোকাতে পারেন তাহলে, পরবর্তীতে যা আপনার আত্মবিশ্বাসের কমতি সমস্যা রয়েছে সেটি অনেকাংশেই কমে যাবে। তাই অবশ্যই কোন কাজ করার আগে পজিটিভ চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন। 

আপনি যদি সেই কাজে ফেল হয়ে যান তাও পজিটিভ চিন্তাভাবনা করার প্রয়োজন। কারণ আমাদের জীবনের সফলতা শুরু হয় ব্যর্থতা দিয়ে। তাই ব্যর্থতা নিয়ে এত চিন্তাভাবনা করে লাভ নেই। তাই যে কোন কাজ করতে গেলে অবশ্যই পজিটিভ চিন্তাভাবনা করতে হবে। কারণ এটা আপনার আত্মবিশ্বাসকে বাড়াতে অনেক সাহায্য করবে।

৫. পরিশ্রমি হওয়া

পরিশ্রম এমন একটা জিনিস যেটি শুধু আপনার আত্মবিশ্বাস নয়। আপনার সফলতাকে আপনার হাতের মুঠোয় এনে দিতে পারবে। কারণ পরিশ্রম এমন একটি জিনিস যার মাধ্যমে আপনি কোন কাজে পারদর্শী হতে পারবেন, সে বিষয়ে সম্পর্কে পজিটিভ চিন্তাভাবনা এমনিতেই চলে আসবে কারণ আপনি সেই বিষয়ে পরিশ্রম করেছেন এবং সে বিষয় সম্পর্কে আপনার ভালো জ্ঞান থাকে। 

এতে করে আপনার আত্মবিশ্বাস নিজে নিজেই বেড়ে যাবে। যেমন উদাহরণস্বরূপ ধরা যায়ঃ আর যদি কোন পরীক্ষার আগে অনেক ভালো প্রিপারেশন নেন তাহলে অবশ্যই আপনার মধ্যে একটি আত্মবিশ্বাস রয়েছে যে আমি অনেক ভালো করে প্রিপারেশন নিয়েছি আমি নিশ্চিত আমি পরীক্ষা অনেক ভালো নাম্বার পাব। 

কারণ আপনি জানেন আপনি পড়াশোনা করেছেন পরীক্ষা দেওয়ার পর সে কোশ্চেন গুলো আনসার আপনি আমি ভালো করে দিয়েছেন। তাহলে ভালো রেজাল্ট অবশ্যই করবেন। তাই আত্মবিশ্বাস বাড়াতে গেলে কিন্তু পরিশ্রম করতে হবে। পরিশ্রম শুধু আপনার আত্মবিশ্বাস কেন এবং আপনার সফলতাকেও এনে দিতে পারবে। তাই জীবনের সফল হতে গেলে অবশ্যই আমাদের পরিশ্রমি হতে হবে।

আত্মবিশ্বাসী মানুষের বৈশিষ্ট্য

আপনি কি জানেন আত্মবিশ্বাসী মানুষের বৈশিষ্ট্য কি। যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে আপনি জানতে পারবেন আত্মবিশ্বাসী মানুষের বৈশিষ্ট্য কি কি।আত্মবিশ্বাসী মানুষের কিছু বৈশিষ্ট্য হতে পারে এমন কিছু লক্ষণ নিচে তুলে ধরা হলো।

1. সাহায্যকারী: তারা অন্যদের সাহায্য করার জন্য সততা দেখায়।

2. মুক্তমন: সামান্য পরিস্থিতিতেও তারা নিজের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করতে পারে।

3. পরিকল্পনাশীল: তারা পরিকল্পনা করতে এবং লক্ষ্যের দিকে প্রবর্তন করতে পক্ষপাতী।

4. পরিশ্রমী: সঠিক অবস্থানে সঠিক সময়ে সঠিক পরিশ্রম করে তারা সফলতা অর্জন করতে চেষ্টা করে।

5. নিবেশিত: আত্মবিশ্বাসী মানুষরা নিজের সামর্থ্য এবং সম্পন্নতার উপর বিশ্বাস রাখেন।

6. আত্মসমর্থ: যখন তারা কোনো কাজ করতে, তারা নিজের সামর্থ্য এবং সংশ্লিষ্ট সম্পর্কে আত্মবিশ্বাস রাখেন।

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url