ভাইভা সম্পর্কে দিক-নির্দেশনা

প্রিয় পাঠক আজকের টাইটেল দেখে নিশ্চয়ই আপনারা বুঝে গেছেন কি নিয়ে আজকে আলোচনা করব। হ্যাঁ আপনার সঠিক ভাবে বুঝতে পেরেছেন আজকে আমরা ভাইবা সম্পর্কে আলোচনা করব। ভাইভা নিয়ে যাদের অনেক ভয় কাজ করছে তাদের জন্য মূলত আজকের এই আর্টিকেল।

তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই ভাইভা সম্পর্কে কি কি জ্ঞান থাকা প্রয়োজন ।এ বিষয়ে আজকে আমরা আলোচনা করব। আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনারা অনেক উপকারী লাগবে জানতে হলে পুরো পর্বটি পড়বেন।

 ভাইবা বোর্ডে ভয়ভীতি রাখা যাবে না

প্রথমে আপনার মধ্যে ভাইভা নিয়ে যদি কোন ভীতি থাকে, তাহলে তা দূর করতে হবে। যদি ভয় নিয়ে স্যারদের সামনে যান, তাহলে স্যারেরা মুহূর্তের মধ্যে তা ধরে ফেলবেন। আর এই ভয় দূর করার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো একটি ভালো প্রস্তুতি। একটি ভালো প্রস্তুতি নিজেকে সব সময় আত্মবিশ্বাসী করে। কারন সে জানে যে সে পারবে, কারণ তিনি সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন। তাহলে এখানে ভয় থাকার কোন প্রশ্নই ওঠে না।

ভাইভা ভয় থেকে বারবার চোখের পলক ফেলা, অকারনে ঘেমে যাওয়া, কপালে হাত যাওয়া, কথা অস্পষ্ট ভাবে বল্‌ স্যার এদের চোখে না তাকে উপরের দিকে কিংবা অন্যদিকে তাকিয়ে থাকা, এ বিষয়গুলো দূর করতে হলে নিয়মিত ভাইভা সেশন করতে হবে। হাসিমুখে না-বোধক উত্তর করা শিখতে হবে। সবকিছু যে পারবেন তা স্যারেরা আশাও করেন না। তবে আপনি কিভাবে সরি স্যার বলেছেন, তা অবশ্যই তারা লক্ষ্য করবেন।

আপনার যে পছন্দ ক্রমে হোক না কেন, ইংরেজিতে ভাইভা হতে পারে। অনেক বেশি কঠিন কঠিন ভোকাবুলারি ব্যবহার করতে হবে এমন কথা নেই। তবে সহজ সাবলীল ভাষায় আপনার উত্তর উপস্থাপন করা জানতে হবে। উত্তর করার সময় বাংলা ইংরেজি মিশিয়ে না বলার চেষ্টা করবেন। বাংলার উত্তর জানতে চাইলে, তা যেন সম্পূর্ণরূপে বাংলায় হয়।

নিজের সম্পর্কে যা জানতে হবেঃ

নিজের সম্পর্কেঃ 

নিজের শৈশব, শিক্ষা জীবন, শখের বিষয় ও পরিবারের সদস্য সম্পর্কে নানা কিছু জিজ্ঞেস করা হয়। প্রিয় শখ বাগান করা হলে বিভিন্ন ফুল ও সৌন্দর্য বর্ধক চারা গাছ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে পারে। পরিবারের যারা যেসব পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন, তাদের পেশা কি সেই সম্পর্কে ইতিবাচক ও শ্রদ্ধাবলী বিবরণ দেওয়া উচিত।

নিজ জেলাঃ

 ভাইভায় নিজ জেলা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি-যাদের সাহিত্য, শিল্প সংস্কৃত্‌ অর্থনীতি, ও মুক্তিযুদ্ধে ব্যাপক অবদান রয়েছে তাদের সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা জরুরী।

 নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ঃ

 নিজ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা প্রয়োজন। ক্যাম্পাসের উল্লেখযোগ্য স্থাপনা, প্রথিতযশা শিক্ষক ও একাডেমিক অর্জন সম্পর্কে জেনে যাওয়া ভালো।

পঠিত বিষয়ঃ 

সম্পর্কে বিশেষ করে পছন্দ তালিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ক্যাডারদের সঙ্গে পঠিত বিষয়ের জ্ঞান কিভাবে সম্পর্কিত, সেটা জানতে চাওয়া হয়। এছাড়া একাডেমিক বিষয়ে মৌলিক জ্ঞান যাচাই করা হয়।

যেসব বিষয়ে জানতে হবেঃ

মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য, নিজের ক্যাডার পছন্দ ক্রমে প্রথম ২ থেকে তিনটি ক্যাডার সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা রাখতে হবে। সংবিধানের সব অনুচ্ছেদ ভালোভাবে পড়তে হবে। পাশাপাশি সংবিধানের প্রস্তাবনা, সংশোধনী ও তফসিল গুলো পড়তে হবে। নিজের জেলায় মুক্তিযুদ্ধকালীন পরিস্থিতি, নিজ জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সময় নেই জেলা যে সেক্টরের অধীনে ছিল সেই সেক্টর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।

এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত চলচ্চিত্র, উপন্যাস, গল্প, নাটক কবিতা, আত্মকথা, গান প্রভৃতি সম্পর্কে জানতে হবে। বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখার পড়তে হবে। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত অন্যান্য মৌলিক সাহিত্য পড়তে হবে। বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে আলোচিত বিষয় গুলো সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।' স্মার্ট বাংলাদেশ' বর্তমানে একটি আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ, স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ ও করণীয়, স্মার্ট বাংলাদেশ অভিসন ২০৪১ এর মধ্যে সম্পর্ক প্রভৃতি পড়া যেতে পারে।

যেসব কাগজপত্র সঙ্গে নিতে হবেঃ

প্রথম সেটঃ 

প্রবেশপত্র, সাক্ষাৎকার পত্র, বিপিএসসি ফর্ম-১, সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, মূল সনদে চার বছর মেয়াদী কোর্স উল্লেখ না থাকলে সে সংক্রান্ত প্রত্যয়ন, স্নাতকোত্তর আবতীর্ণ সনদ, ওজন, উচ্চতা, বুকের মাপ, স্থায়ী ঠিকানা সপক্ষে সনদ, এনআইডি কার্ড, বি পি এস সি ফর্ম-৩, এম বি ডি সি রেজিস্ট্রেশন কার্ড।

দ্বিতীয় সেটঃ 

সত্যায়িত ছবি তিন কপি, বিপিএসসি বিপিএসসি ফর্ম-১, সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, মূল সনদের চার বছর মেয়াদ্‌ কোর্স উল্লেখ না থাকলে সে সংক্রান্ত প্রত্যয়ন, স্নাতকোত্তর অবতীর্্‌ ওজন, উচ্চত্‌ বুকের মাপ, ছাড়পত্র, নাগরিকত্ব, এন আই ডির অনুলিপি, চাকরির বৃত্তান্ত যাচাই ফর্ম ২্টি, বিপিএসসি ফর্ম-৩ একটি, এমবিডিসি রেজিস্ট্রেশন কার্ড ফটোকপি

তৃতীয় সেটঃ 

সত্যায়িত ছবি তিন কপি, বিপিএসসি ফর্ম-১, সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, মূলসনদে চার বছর মেয়াদী কোর্স না থাকলে সে সংক্রান্ত প্রত্যয়ন, স্নাতকোত্তর অবতীর্ণ , ওজন, উচ্চতা, বুকের মাপ, ছাড়পত্র, নাগরিকত্ব , এন আইডির অনুলিপ্‌ চাকরি বৃত্তান্ত যাচাই ফর্ম, বিপিএসসি ফর্ম -৩, এমবিডিসি রেজিস্ট্রেশন কার্ড ফটোকপি

পোশাক

ছেলেদের পোশাক

ড্রেস আপঃ 

পুরুষেরা ফরমাল হয়ে যাবেন অবশ্যই। হালকা রঙের জামা, ফুলহাতা, ফরমাল জু্তো, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ব্লেজার করতে পারেন।

গেট আপঃ 

দাড়ি যদি সুন্নতি দাড়ি হয় কোন সমস্যা নেই, অন্যথায় ক্লিন সেভ বন্ধনীয়। ড্রেস ভালো হবে আইরন করা থাকলে সুন্দর দেখায়। টাই পড়লে বেল্টের হালকা ওপর পর্যন্ত রাখবেন। ছুট পড়লে শুটের হাত আর বাইরে হাত আর শার্ট দেখা যাবে।

অন্যান্য দিকঃ 

শুধু পোশাকেই নয়, প্রার্থীদের অঙ্গভঙ্গি এবং চলাফেরা মর্জিত ও সালিন ভাব ফুটিয়ে তোলা চাই। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব এবং আত্মবিশ্বাসী অফিসার সুলভ আচরণ একজন প্রার্থী সফলতা লাভ সহজে করে দিতে পারে। চূড়ান্ত ভাইভা পরীক্ষার আগেই এই ব্যাপার গুলো অনুশীলন করে না ভালো।

মেয়েদের পোশাক

যেকোন ভাইভায় পোশাক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পোশাকে আপনার ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পায়।

পোশাকের রং

বিসিএস ভাইভায় বেশির ভাগ মেয়ে শাড়ি পড়তে পছন্দ করে। তারা সাধারণত নীল বেগুনি জলপাই বা হালকা গোলাপের শাড়ি পড়ে। কেউ সালোয়ার কামিজ পরলেও এই রং গুলো পছন্দ করে বোরকা যেকোন মার্জিত রংয়ের হতে পা্রে।

হিজাব পড়া যাবে কিনা

বিসিএস ভাই ভাই হিজাব বা বোরকার কোন নিসে ধাক্কা নেই। আপনি যেকোন কালার করতে পারেন।

মেকআপ

এখানে ভারী মেকআপ মানানো সই নয় হালকা মেকআপ এবং হালকা রঙের লিপস্টিক মেয়েদের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলে।

জুতা

পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে যে কোন রং এর হালকা উঁচু হিল জুতা মানান সই। তবে সাধারণত সবাই কালো অথবা বাদামী রঙের আরামদায়ক ব্র্যান্ডের জুতা পরে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আশা করছি আজকের আর্টিকেলটা আপনার সম্পূর্ণ রূপে পড়েছেন। এবং জানতে পেরেছেন ভাইভা কিভাবে দিতে হয়। আশা করছি আজকে এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারী লাগবে। আজকের আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মতামত থাকলে কমেন্ট করতে ভুল করবেন না।

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url