কলমি শাকে কি এলার্জি আছে - কলমি শাকের পুষ্টিগুণ

অতি পরিচিত একটি শাক হলো এই কলমি। ভেজা মাটি কিংবা পানিতে চাষ করা হয় এই কলমি শাকের। শুধু আমাদের বাংলাদেশে নয় এশিয়া মহাদেশের সব জায়গায় কলমি শাক চাষ করা হয়। কলমি শাক সাধারণত ভাজি হিসেবে খাওয়া হয়। আর বাংলাদেশের মানুষ শাক খেতে অনেক পছন্দ করে। তাই বাংলাদেশের মানুষের অন্যান্য পছন্দের শাকও মধ্যে এই কলমি শাকও রয়েছে।

কলমি শাকে কি এলার্জি আছে - কলমি শাকের পুষ্টিগুণ

এই কলমি শাকের বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। এর যেমন বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে তেমনি কিছু অপকারিতা ও রয়েছে। সেগুলো সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। নইলে কলমি শাক খাওয়ার পরে যে কোন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তা এ ধরনের সমস্যা এড়াতে অবশ্যই এর উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে।

কলমি শাকের পুষ্টিগুণঃ

কলমি শাকে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ উপাদান রয়েছে। যেটিকে আমরা অনেকেই জানিনা। কলমি শাক আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কলমি শাকে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যেগুলো অন্যান্য শাকে খুব একটা পাওয়া যায় না। কারণ একেক ধরনের শাকের একেক উপকারিতা রয়েছে।

 তেমনি এই কলমি শাকেরও ভিন্ন উপকারিতা রয়েছে, যেগুলো অন্যান্য শাকে খুব একটা পাওয়া যায় না। তাই এ ধরনের উপকারিতা গুলো পেতে হলে অবশ্যই সঠিক নিয়মে খেতে হবে। সেসঙ্গে কলমি শাকের অপকারী দিকগুলো থেকে সচেতন থাকতে হবে। তাহলে সঠিকভাবে উপকারিতা গুলো আমরা পেয়ে যাব। এতে কোন ধরনের সমস্যা হবে না। 

কলমি শাকের অন্যান্য উপাদানের তুলনায় আয়রনের সংখ্যা অনেক বেশি। এছাড়াও রয়েছে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগণ উপাদান। যেগুলো আমাদের শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করে।

কলমি শাকের উপকারিতাঃ

কলমি শাক আমাদের সকলের কাছে একটি পরিচিত শাক। সারাবছর আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের শাক উৎপাদন হয়। এর মধ্যে অন্যতম একটি শাক হলো কলমি শাক। অন্যান্য শাক গুলো শুকনো মাটিতে হলেও, এই কলমি শাক ভিজে মাটিতে অথবা পানিতে হয়। 

এটি আমরা অনেকেই জানি না। তেমনি কলমি শাকের কিছু উপকারিতা রয়েছে যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। সেগুলো আমরা অনেকেই জানিনা। আমরা অনেকেই কলমি শাক খাই, তবুও এর সকল উপকারিতা সম্পর্কে জানি না। এর যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন অপকারিতাও রয়েছে। 
আরো পড়ুনঃ  বেগুনের যত গুন

এর উপকারিতা গুলো সঠিকভাবে পেতে হলে অবশ্যই কলমি শাক সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। এর উপকার এবং অপকারী দুইটি দিকে জানতে হবে এবং এই কলমি শাক কেন আমাদের জন্য অপকারি সেটিও জানতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেই কোন শাকের কিছু উপকারিতা।

ওজন কমাতে সাহায্য করে

কলমি শাক কম ক্যালোরিযুক্ত একটি খাবার। আমরা হয়তো অনেকেই জানি যে ওজন কমাতে হলে অবশ্যই আমাদের কোন ক্যালরিযুক্ত খাবার খেতে হবে। কারণ এই ক্যালরিগুলো আমাদের শরীরের ওজন বাড়িয়ে দেয়। তাই ওজন কমাতে হলে অবশ্যই ক্যালরিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এছাড়া কলমি শাকে রয়েছে ফাইবারের একটি ভালো উৎস। 

আমরা হয়তো অনেকেই জানি যে ফাইবারযুক্ত খাবার আমাদের পেট অনেক সময় পর্যন্ত ভরা রাখতে সাহায্য করে। এতে করে যে বেশি খাবারের সমস্যাটি রয়েছে সেটি দূর করতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয় এটি আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করত সাহায্য করে। ফলে আমাদের শরীরের অতিরিক্ত খাবার গুলো খুব সহজে হজম হয়ে যায়। আর এই কারণে মূলত খুব সহজে ওজন কমানো যায়, এই কলমি শাক খেয়ে।

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে কলমি শাকে

আমরা হয়তো সকলে জানি যে ভিটামিন এ আমাদের চোখের জন অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। একমাত্র এই ভিটামিন এর মাধ্যমে আমাদের চোখের সমস্যা গুলো খুব তাড়াতাড়ি দূর করা যায়। এছাড়াও ভিটামিন এ আমাদের শরীরে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।

 এন্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। শুধু চোখের জন্য নয় ত্বক, দাঁত ইত্যাদি অঙ্গ গুলো ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও তাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখে কম দেখার সমস্যা হয়েছে, এই ভিটামিন কে তাদের চোখের দৃষ্টি ভালো করতে সাহায্য করবে।

 ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে আনে কলমি শাকে

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে কলমি শাক। কারণ এই কলমি শাকে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো ক্যান্সার কোষ সৃষ্টি হতে এবং বৃদ্ধি হতে বাধা দেয়। ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য মূলত ক্যান্সার হয়ে থাকে। আর যখন এই কোষ নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে তখন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে। আর এই কলমি শাক খেলে, ক্যান্সার কষে নিয়ন্ত্রনে রাখা যাবে। তাই যে কোন ধরনের ক্যান্সার হওয়া থেকে বাঁচাতে পারে এই কলমি শাক। ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে আপনারাও নিয়মিতভাবে কলমি শাক খেতে পারেন।

হার্টের সমস্যা দূর হয়

হার্টের সমস্যা দূর করতে কল মি শাক অনেক উপকারী একটি খাদ্য। কারণ এতে থাকা ফাইবার উপাদান আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে। খারাপ কোলেস্টেরল গুলো আমাদের হার্টের জন্য অনেক  ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এই খারাপ কোলেস্টেরল গুলো আমাদের রক্ত চলাচলের বাধা দেয়। 

আর আমরা হয়তো সকলেই জানি যে, হৃদপিণ্ড থেকে রক্ত সঞ্চালন হয়। যখন বাধা দেয় তখন সরাসরি হৃদপিন্ডের এর প্রভাব পড়ে। ফলে হার্ট এটাক বা স্টকের মত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। এ ধরনের সমস্যার ঝুঁকি কমাতে কলমি শাক অনেক উপকারী।

আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে

কলমি শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। এই আইরন আমাদের রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। আয়রনের অভাবে মূলত রক্তস্বল্পতার সমস্যা হয়। শুধু রক্তস্বল্পতা নয় আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। আর কলমিতে যথেষ্ট পরিমাণে আয়রন রয়েছে যেগুলো, আমাদের শরীরের ঘাটতি গুলো কমাতে সাহায্য করবে। তাই যাদের আয়রনের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিতভাবে এই কলমি শাক খেতে পারেন।

 তাদের আয়রনের ঘাটতি অনেকটা পূরণ করতে সাহায্য করবে এবং রক্তস্বল্পতা দূর করতেও সাহায্য করবে। এছাড়াও আইরন রক্তের লোহিত রক্তকণিকা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আর এল এতে রক্ত কণিকার রক্তের মাধ্যমে আমাদের পুরো শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরের সঠিক নিয়ম অক্সিজেন সরবরাহ হলে বিভিন্ন ধরনের রোগের সমস্যাও দূর হয়ে যাবে।

কলমি শাকের অপকারিতাঃ


কলমি শাকের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর অপকারিতা হয়েছে। অনেকে এর উপকারিতা সম্পর্কে না জেনে, কলমি শাক খেয়ে থাকেন। এ কারণেই মূলত অনেকের মনে ভুল ধারণা সৃষ্টি হয় যে, কলমি শাকের কোন উপকারিতা নেই বরং এর শুধু অপকারিতই রয়েছে।

কিডনির সমস্যা

যাদের আগে থেকে কিডনির সমস্যা রয়েছে তাদের কোন শাখা একদমই উপকারী নয় কারণ, কলমি কিডনির সমস্যা গুলো আরো বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। এছাড়াও যাদের কিডনিতে পাথরের মত সমস্যা রয়েছে এটি তাদের জন্য অনেক ক্ষতিকারক। এটি কিডনির পাথরের সমস্যা আরো বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। তাই কারো যদি কিডনির জনিত  সমস্যাগুলো থাকে, তাহলে তাদের কলমি শাক এড়িয়ে চলতে হবে। আর আপনারা যদি এড়িয়ে না চালান তাহলে সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে।

হজমের সমস্যা রয়েছে

এখন অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে যে, কলমি শাকেতো ফাইবার রয়েছে। ফাইবার হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাহলে যাদের হজমের সমস্যা হয়েছে তাদের জন্য কেন অপকারী। আসলে যাদের এখনও পর্যন্ত হজমের সমস্যা নেই তাদের জন্য উপকারী। আর যাদের বর্তমানে হজমের সমস্যা রয়েছে, তাই তারা হজমের সমস্যা টাকে দূর করতে কলমি শাক খাচ্ছেন। 

তাদের জন্য কিন্তু কলমি শাক ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই যাদের বর্তমানে হজমে সমস্যা রয়েছে কলমি শাক থেকে বিরত থাকতে হয়। এটি না হয় আপনার হজের সমস্যা আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই অবশ্যই হজনের সমস্যা থাকলে কর্মীর সাথে থেকে বিরত থাকতে হবে।


পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url