মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ভালো রাখার উপায়

পড়ায় মন বসে না, পড়তে বসলে পড়াগুলো সহজে মাথায় ঢোকে না। আবার কোন জিনিস পড়লে সেটি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত মনে থাকে না। পরীক্ষায় যে ঠিকই ভুলে যায়। এই ধরনের সমস্যা আমাদের সবার মধ্যে এখন একটি কথাই কমন।

মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ভালো রাখার উপায়


এখন প্রশ্ন হল আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কিভাবে বাড়াবো। দিন দিন আমাদের মস্তিষ্ক দুর্বল হয়ে পড়ছে। আমরা কিভাবে আমাদের মস্তিষ্ক কে সব সময় ভালো রাখবো। এ প্রশ্নটিই সবার মধ্যেই রয়েছে। সমস্যা যখন রয়েছে সমাধান অবশ্যই থাকবে।

ভুমিকা

আমাদের ব্রেনের সমস্যা দূর করার উপায় রয়েছে। আমাদের ব্রেন কে ভালো রাখার জন্য দুইটি কাজ করা যেতে পারে একটি হলো, মস্তিষ্ক ভালো রাখার ব্যায়াম করা এবং দ্বিতীয়টি হলো আমাদের মস্তিষ্ক ভালো রাখা খাবার।
এই দুইটি কাজ করার মাধ্যমে আমরা আমাদের মস্তিষ্ক ভালো রাখতে পারবো। তাহলে তো জেনে নেই কিভাবে আমাদের মস্তিষ্ক কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়। আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনি সম্পূর্ণরূপা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন।জানতে হলে পুরো পর্বটি দেখুন।

মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করার ব্যায়ামঃ

মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ভালো রাখার জন্য অবশ্যই আমাদের ব্যায়াম করতে হবে। এটি শারীরিক ব্যায়াম নয় মস্তিষ্কের ব্যায়াম। যেগুলো করার মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে। আমাদের প্রতিদিনের কাজের মধ্যেই অনেক মস্তিষ্কের ব্যায়ামের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একটু চেষ্টা করি তাহলে সেগুলোকে করতে পারব।

এগুলো করার মাধ্যমে যেমন আমাদের মস্তিষ্ক ভালো থাকবে তেমনি আমাদের শরীর অসুস্থ থাকবে। তাই শরীর সুস্থ রাখার জন্য অন্তত এগুলো করা প্রয়োজন। এভাবে যদি রেগুলার আপনি এই পাঁচটি টিপসগুলোকে ফলো করেন। তাহলে খুব কম সময়ের মধ্যে আপনি এর রেজাল্ট দেখতে পারবেন।

১। প্রার্থনা করা

 ইসলাম ধর্মে প্রতিটা মুসলিমের নামাজ পড়া ফরজ কাজ। আমরা হয়তো অনেকেই হজের ফজিলত সম্পর্কে জানি। নামাজের মাধ্যমে আমরা শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি নয় আমাদের শরীরকে ভালো রাখতে পারব। নামাজ পড়ার মাধ্যমে আমাদের মন ও মস্তিষ্ক দুটাই ভালো থাকে। এটি আমরা অনেকেই জানিনা। আর যারা অন্য ধর্মে আছেন তারা তাদের ধর্ম অনুযায়ী করতে পারেন অথবা মেডিটেশন করতে পারেন। এটি আপনার ব্রেনের জন্য অনেক উপকারী হবে।

২। কল্পনা করা

 মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা সতল রাখার জন্য কল্পনা করা অনেক জরুরি। আপনি কোথাও যাওয়ার আগে চিন্তা করতে পারেন যে সেখানে যে আপনি কি কি করবেন, যাওয়ার পথে কি কি দেখতে পারবেন। এই ব্যাপারগুলো আপনি শুধু কল্পনা করবেন। এরপরে আপনি যখন যাচ্ছেন সেগুলো মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করবেন যে কোন কোন ইমাজিন গুলো মিলে গেছে। অনেক সময় নাও মিলতে পারে কিন্তু যেইসব জিনিস গুলো মিলেছে সেগুলোকে মনে রাখতে হবে। কিন্তু এই যে আপনি ইমাজিন এবং প্রেজেন্ট সেগুলোকে মিলিয়ে দেখছেন। এটি আপনার মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অনেক সাহায্য করবে।

৩। সবগুলো ইন্দ্রিয় একসাথে ব্যবহার করা

 মস্তিক রাখার জন্য এবং পড়া গুলো খুব তাড়াতাড়ি মনে রাখার জন্য এই টিপসটি অনেক কার্যকরি। এখন কথা হলো এটি কি আমরা কিভাবে করব। ধরুন আপনি পড়তে বসেছেন। আসলে অবশ্যই আমরা হাত ব্যবহার করি, ব্রেন, কান, মুখ চোখ। আমরা যদি এই সবগুলোকে একসাথে ব্যবহার করতে পারি তাহলে অনেক কাজে দিবে। আপনি যখন কোন পড়া পড়ছেন সেগুলোকে পড়ার সময় নোট করুন। আপনি যেগুলো কে নোট করছেন সেগুলোকে পরে দেখার কোন প্রয়োজন নেই।

 আপনি শুধু পড়ার সময় আপনার যেগুলো খুব ইম্পরট্যান্ট মনে হতো সেগুলোকে লিখে ফেলুন। আর যখন আপনি কোন সাবজেক্ট বুঝার চেষ্টা করছেন তখন হাতগুলোকে নড়ানোর চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার সবগুলো ইন্দ্র একসাথে ব্যবহার হবে। আর পড়াগুলো কেউ খুব সহজে মনে রাখতে পারবেন।

৪। গেম খেলা

এখন বলতে পারেন গেম খেলে কিভাবে আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে পারি। অবশ্যই গেম খেলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ানো যায়। কিন্তু সব ধরনের গেম খেলে কিন্তু মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ানো যায় না। এমন কিছু কিছু গেম রয়েছে যেগুলোতে সত্যি আপনার মাথা খাটাতে হয়। যখন আপনি আপনার মস্তিষ্ককে কোন কাজ ফোকাস করবেন তখন আপনার মস্তিষ্ক আরো কাজ করতে থাকবে।

সেটা যদি আপনি গেম খেলার ক্ষেত্রে করেন, তাহলে আপনার সেই আগ্রহ টা অনেক বেশি হয়ে যাবে। তখন আপনি যেকোনো মুহূর্তে যেটার চেষ্টা করবেন। এতে করে আপনার মস্তিষ্ক সেই কাজে ফোকাস দিতে শুরু করবে। এভাবে আপনার মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা বাড়তে থাকবে। তাই গেম খেলার মাধ্যমেও মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ানো যায়। এই গেমগুলোর মধ্যে রয়েছে দাবা, লুডু , রুবিক্স কিউব ইত্যাদি আরো বিভিন্ন ধরনের গেম রয়েছে। যেগুলো আপনার মস্তিষ্কের কর্ম খাওয়াতে বাড়াতে অনেক সাহায্য করবে।

৫। শারীরিক ব্যায়াম করা

যেমন  মস্তিষ্ক ভালো রাখতে সাহায্য করে। তেমন শারীরিক ব্যায়ামও মস্তিষ্ক কর্ম ক্ষমতা ভালো রাখ অনেক সাহায্য করবে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সকালে ঘুম থেকে ওঠা। মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা ভালো রাখতে হলে অবশ্যই সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে। এছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম রয়েছে যেগুলোকে করতে পারেন যেমনঃ সাইকেল চালানো, দৌড়ানো ইত্যাদি আর বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম।

 এগুলো আপনার মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা ভালো রাখতে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে আপনার শরীর ভালো লাগতো সাহায্য করবে। তাই শারীরিক ব্যায়াম করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এটি আপনাদের মন ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং কাজের ফোকাস করতে অনেক সাহায্য করে।

মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করার খাবারঃ

এতক্ষণ হলো ব্যায়ামের কথা। ব্যায়াম যেমন আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে তেমনি সঠিক খাদ্য অভ্যাসের মাধ্যমেও আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে পারে। ব্যায়ামের পাশাপাশি সঠিক খাদ্যাভ্যাসেরও প্রয়োজন রয়েছে আমাদের মস্তিষ্কের জন্য। 

তাই ব্যায়ামগুলো ফলো করার পাশাপাশি নিয়মিত আপনার কোন কোন খাবারগুলো খাওয়া প্রয়োজন সেগুলো তো ফলো করতে হবে। আর মস্তিষ্ক ভালো রাখার যেসব খাবার রয়েছে। সেগুলো কোন খাটনি ছাড়া শুধু খাওয়ার মাধ্যমে আপনার মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই এর কাজ খুব একটা কঠিন হবে না বলে মনে হয়। তাই চলুন দেখে নেই মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ভালো রাখার জন্য কিছু খাবার।

১। চর্বি জাতীয় মাছ

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না যে, আমাদের ব্রেনের বেশিরভাগ অংশ চর্বি দিয়ে ভর্তি। আর এই চর্বির বেশি অংশই ওমেগা থোরি ফ্যাটি এসিড। তাই আমাদের ব্রেনের জন্য ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড খুবই প্রয়োজনীয়। চর্বি জাতীয় মাছ কিন্তু প্রচুর পরিমাণে ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। তাই চর্বিযুক্ত মাছগুলো আপনার মস্তিষ্কের জন্য অনেক ভালো হবে। বিশেষ করে সেটা যদি সামুদ্রিক মাছ হয়। কিন্তু এমনি মাছের চর্বিও আপনার ব্রেনের জন্য ভালো হবে।

২। বাদাম

বাদাম আমাদের মস্তিষ্ক ভালো রাখতে অনেক সাহায্য করে। এমনকি অনেক গবেষণা জানা গেছে যে, বাদাম আমাদের ব্রেনের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অনেক সাহায্য করে। বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের যেমন শক্তি কমে যেতে থাকে তেমনি ব্রেনের কর্ম ক্ষমতা কমে যেতে থাকে। বিজ্ঞানীরা একটি গবেষণায় জানতে পেরেছেন যে, যারা নিয়মিত বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করেছেন। বয়স জনিত যে ব্রেনের সমস্যাগুলো রয়েছে সেগুলো অনেকটাই কম হয়। তাই আপনারা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য বাদাম খেতে পারেন।

৩। ডিম

আপনার হয়তো দেখবেন, শিশু বয়সে বাচ্চাদের নিয়মিত ভাবে ডিম খাওয়ানো হয়। সেটা ডিম সিদ্ধ হোক কিংবা ডিম ভাজি। এখন ভাবুন তো এটা কেন খাওয়ানো হয়। ডিমের বদলে অন্য খাবারও তো খাওয়াতে পারে। কারণ ডিম মস্তিষ্কের কর্মক্ষম থেকে বৃদ্ধি করতে অনেক সাহায্য করে। সেই সঙ্গে শিশু শারীরিক বৃদ্ধিতে অনেক সাহায্য করে। তাই আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করা ডিম অনেক উপকারী একটি খাবার।

৪।গ্রিন টি

এখন বলতে পারেন যে, গ্রিন টি তো শরীরকে ফ্রি রাখার জন্য বানানো হয়েছে। তাহলে এটি কার মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কিভাবে বাড়তে পারে। অবশ্যই বাড়তে পারে কারণ গ্রিন টিকে এমন ভাবে বানানো হয়েছে যার মধ্যে, কিছু বিশেষ পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। যেগুলো আপনার মস্তিষ্কের কোন ক্ষমতা বাড়াতে অনেক সাহায্য করবে। গ্রিন টি তে এক ধরনের এক ধরনের অ্যামাইনো এসিড থাকে, যেটি আমাদের ব্রেনের একটিভিটি আর বাড়িটিতে সাহায্য করে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে লাগবে। আপনারা যারা স্টুডেন্ট তাদের অনেক উপকার লাগবে। তাই আজকের এই পর্বটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়বেন। এবং আজকের আর্টিকেল থেকে যদি আপনি উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url