কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ - কনজাংটিভাইটিস এর ঔষধ

সাধারণত চোখ উঠা রোগকে কনজাংটিভাইটিস বলা হয়। অনেকে কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ সম্পর্কে জানেন না। তারা এ ড্রপ সম্পর্কে জানতে চান। আজকে আমরা এই আর্টিকেলে কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ এবং এ সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে আপনাদেরকে বিস্তারিত জানাবো। তাই কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

আমাদের চোখে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব পড়লে আমরা বিভিন্ন ধরনের ড্রপ ও অয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করে থাকি। আজকে আমরা আপনাদেরকে সেই রকমই কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ সম্পর্কে জানাবো। চলুন তাহলে জেনে আসা যাক কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ সম্পর্কে।

ভূমিকা: কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ

কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা রোগ হলো এমন একটি সংক্রমণ রোগ যা সাধারণত স্পর্শের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ায়। কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এটি মূলত ছোঁয়াচে রোগ যা সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহারযোগ বস্তু যেমন রুমাল বালিশ তোয়ালে ইত্যাদির মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। 


তাই চোখ ওঠা বা কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী।কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ সম্পর্কে জানতে হবে। আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে আপনারা কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ এবং এ সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ

কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা হলো চোখের ভাইরাসজনিত ইনফেকশন। এটি একটি সংক্রমণ রোগ। যদি কোন আক্রান্ত ব্যক্তি কোন বস্তুকে স্পর্শ করে এবং সেটি যদি জীবাণুমুক্ত করা না হয় তার স্পর্শ করার জিনিস অন্য কেউ ধরলে তার মাধ্যমে এ রোগ সংক্রমিত হতে পারে। সাধারণত চোখ ওঠা বা কনজাংটিভাইটিস বলতে চোখ লাল হওয়া বা ফুলে যাওয়াকে বোঝানো হয়ে থাকে। 

কিন্তু এই চোখ লাল হয়ে যাওয়া একটি উপসর্গ মাত্র কারণ, বিভিন্ন কারণেই চোখ লাল হতে পারে। তাই চোখ ওঠা বা কনজাংটিভাইটিস রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ এবং এটার ব্যবহার সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী।

কনজাংটিভাইটিস এর লক্ষণ এবং করণীয়

কনজাংটিভাইটিস বা চোখ উঠা রোগ চিহ্নিত করার জন্য বা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কনজাংটিভাইটিস এর লক্ষণ এবং সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। অনেকেই কনজাংটিভাইটিস এর লক্ষণ এবং করণীয় সম্পর্কে জানতে চান। নিচে এর লক্ষণ এবং করণীয় সমূহ তুলে ধরা হলো:
কনজাংটিভাইটিস এর লক্ষণ সমূহঃ
  • চোখ জ্বালাপোড়া করা
  • চোখের ভেতরে অস্বস্তি হওয়া
  • চোখ সামান্য ফুলে যাওয়া
  • রোদে বা আলোতে তাকাতে কষ্ট হওয়া
  • অতিমাত্রায় চোখ দিয়ে পানি পড়া
  • চোখ লাল হয়ে ফুলে ওঠা
  • চোখে ব্যথা হওয়া এবং চোখ খচখচ করা
  • চোখ জ্বালাপোড়া হওয়া
  • চোখের মনের আসে পাশে হালকা লাল হয়ে থাকা
  • চোখ খুলে রাখতে অসুবিধা বোধ করা
  • ঘুম থেকে ওঠার পর চোখের পাতা একটি সাথে অপরটি একত্রে লেগে থাকা
  • চোখ থেকে স্লেশা জাতীয় পদার্থ বের হতে থাকা
  • হলুদ রঙের পুঁজ বের হওয়া
  • দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া
কনজাংটিভাইটিস হলে করণীয়: 
  • চোখের পানি পরিষ্কার করার জন্য নরম টিস্যু বা নরম কাপড় ব্যবহার করা উচিত
  • ধুলাবালি থেকে দূরে থাকতে হবে
  • চোখের পাতা বেশি ফুলে গেলে তাতে বরফ দেওয়া যেতে পারে
  • সংক্রমিত চোখের বেশি হাত দেওয়া যাবে না
  • হাত পরিষ্কার না করে যখন তখন চোখ ঘষা বা চুলকানো যাবে না
  • আগুন এর কাছে যাওয়া যাবে না
  • আলো বা রোদে কম যেতে হবে
  • ময়লা আবর্জনাযুক্ত স্যাঁতসেতে জায়গায় যাওয়া যাবে না
  • চোখে কালো চশমা ব্যবহার করতে হবে যাতে বাইরের ধুলাবালি বা কোন আঘাত না লাগে
  • সম্ভব হলে দশ থেকে পনেরো দিন পর্যন্ত সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে
  • দিনে কয়েকবার, উষ্ণ গরম পানিতে লবণ দিয়ে চোখ তুলোর সাহায্যে চোখ মুছে নেওয়া যেতে পারে
  • এ সময়ে টেলিভিশন না দেখায় উত্তম
  • চোখে হাত না দেওয়া বা না চুলকানো
  • প্রয়োজনে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে এবং সে অনুযায়ী চলতে হবে।
  • অন্যদের মধ্যে যাতে এই রোগ সংক্রমিত হতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে

কনজাংটিভাইটিস এর ঔষধ

অনেকেই কনজাংটিভাইটিস এর ঔষধ সম্পর্কে জানেন না। কারো কারো ক্ষেত্রে এটি জটিল রূপ ধারণ করতে পারে তাই এর থেকে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই কনজাংটিভাইটিস এর ঔষধ সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী। নিচে কনজাংটিভাইটিস এর ওষুধ সম্পর্কে তুলে ধরা হলো:


এই রোগটি সাধারণত এমনিতে ভালো হয়ে যেতে পারে কিন্তু প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আর্টিফিশিয়ালটিআর এবং অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ম মেনে ব্যবহার করা যেতে পারে।
কনজাংটিভাইটিস এর ক্ষেত্রে এনগাট ০.৫% আই ড্রপ ও অয়েনমেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।
কনজাংটিভাইটিস ব্যবহার করার সময় এটি হঠাৎ করে বন্ধ করা যাবে না কারণ, এর ফলে কনজাংটিভাইটিস এর সংক্রমণ পুনরায় ঘটতে পারে। 

এবং এই ড্রপ এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যেমন: চোখ দিয়ে পানি পড়া, মাথা ব্যথা হওয়া, চোখ জ্বালাপোড়া করা, মুখের স্বাদ খারাপ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। তাই কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ ব্যবহার করার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে, এবং সে অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।

কনজাংটিভাইটিস কত প্রকার

কনজাংটিভাইটিস বা চোখ উঠা রোগের সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। মূলত আমাদের প্রত্যেকের জীবনে কখনো না কখনো এই রোগ হয়েছে। এটি সাধারণত চোখের পর্দা বা কনজাংটিভাই প্রদাহের কারণে হয়ে থাকে। নিচে কনজাংটিভাইটিস এর প্রকারভেদ তুলে ধরা হলো:
  • সিজনাল অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস(মূলত এটি সবচেয়ে সাধারণ প্রকার)
  • বহুবর্ষজীবী অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস
  • ভার্নাল কেরাটোকনজাংটিভাইটিস(এটি সাধারণত শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা দেয়)
  • জায়ান্ট প্যাপিলারি কনজাংটিভাইটিস(প্রতিদিন কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারকারীদের মধ্যে বেশি দেখা দেয়

কনজাংটিভাইটিস কেন হয়

কনজাংটিভাইটিস এই রোগটি মূলত একটি ছোঁয়াচে রোগ যা অন্যের দ্বারা সংক্রমিত হয়। আমাদের দেশে এটি একটি কমন রোগ, যা কোনো মানুষের হয়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। সাধারণত যে সময় বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ বেশি থাকে ঠিক সে সময়টাতে এই রোগের আবির্ভাব ঘটে। 


অনেকেই মনে করেন কনজাংটিভাইটিস এ আক্রান্ত ব্যক্তির চোখের দিকে তাকালেই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে যাবে যা একটি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা।নিচে কনজাংটিভাইটিস হওয়ার কারণ সমূহ তুলে ধরা হলো:
  • যদি চোখে ভাইরাসের কারণে প্রদাহ হয় তাহলে চোখের পানিতে ভাইরাস ভেসে বেড়াই। সরাসরি হাত দিয়ে চোখ স্পর্শ করলে সে ভাইরাস হাতে চলে আসে যার মাধ্যমে অন্য কিছু স্পর্শ করলে সেটি এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়ে যায়
  • আক্রান্ত ব্যক্তির তোয়ালে, রুমাল, সানগ্লাস, টিস্যু বা কাপড় ব্যবহারের মাধ্যমে এ ভাইরাস হয়
  • দৈনিক কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করার ফলে এলার্জিজনিত কারণে কনজাংটিভাইটিস হতে পারে
  • আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে হ্যান্ডশেক করলে এ ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে

শেষ কথা: কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ

আজকের এ আর্টিকেলে আমরা চোখ ওঠার সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে আলোচনা করেছি, যেখানে কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ,কনজাংটিভাইটিস এর লক্ষণ এবং করণীয়,কনজাংটিভাইটিস এর ঔষধ,কনজাংটিভাইটিস কত প্রকার,কনজাংটিভাইটিস কেন হয় এ সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। 

আশা করছি আপনারা কনজাংটিভাইটিস এর ড্রপ আর্টিকেলের মাধ্যমে চোখ ওঠা বা এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।


পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url