কাশ্মিরের ভাপা পিঠা তৈরির উপায়

বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। ছয়টি ঋতু নিয়ে এ বাংলাদেশ। যেখানে অন্যান্য দেশে চার কিংবা পাঁচ জড়িত থাকে। এক এক ঋতুতে একেক রূপ । প্রত্যেকটা ঋতুতে বাংলাদেশ যেন নতুন করে সেজে ওঠে। তেমন এক ধরনের ঋতু হলো শীতকাল। 

শীতকাল সময়টা প্রায় সবারই ভালো লাগে। অন্যান্য ঋতুর থেকে শীতকালে বেশি পিঠাপুলি বানানো হয়। তার সাথে যদি থাকে কাশ্মীরের ভাপা পিঠা  তাহলে সেটা অনেক ভালো লাগে। আজকে আমরা জানবো কাশ্মীরের ভাপা পিঠা  বানানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। জানতে হলে পুরো পর্বটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ভূমিকা

আর এমনিতেও শীতকালে গরম গরম পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। শীতকাল মৌসুমটা ঠান্ডা থাকে। তাই এই সময়ে গরম গরম পিঠার স্বাদ যেন আরো বেড়ে যায়। সচরাচর গ্রামে  পিঠাপুলি বেশি বানানো হয়। কারণ গ্রামের প্রত্যেকের ঘরে এ সময় ওঠে নতুন ধান। নতুন ধান থেকে তারা নতুন চালের আটা তৈরি করে। আর এই দিয়ে তৈরি হয় নানা রকমের মজাদার পিঠা। এছাড়াও রয়েছে খেজুরের রস।

শীতকাল ছাড়া অন্য সময় এ খেজুরের রস পাওয়া যায় না। প্রকৃতগত কারণে শুধু এই শীত মৌসুমেই পাওয়া যায়। খেজুরের রস থেকে তৈরি হয় টাটকা টাটকা খেজুরগুড়। চালের গুড় দিয়ে পিঠা যেন আরো অধিক সুস্বাদু হয়ে ওঠে। শুধু যে গ্রামে পিঠাপুলি তৈরি হয় তা কিন্তু নয়। আজকাল শহরেও অনেক পিঠাপুলি বানানো হচ্ছে। বাড়িতে বাড়িতে পিঠাপুলে বানানোর পাশাপাশি রাস্তায়ও সেগুলো বিক্রি হয়। 

কোথায় ভাপা পিঠা পাওয়া যায়

এই পিঠার কদর এতটাই বেড়ে গেছে যে বিভিন্ন বড় বড় হোটেলও এ পিঠাগুলো বিক্রি করা হয়।তেমনি এক ধরনের পিঠা হল ভাপা পিঠা। এটিও শীতের একটি অন্যতম পিঠা। অন্যান্য পিঠা সারা বছরে যেকোনো সময় বানানো হলেও এই পিঠা শুধুমাত্র শীতকালে বানানো হয়। এমনকি শীতের মৌসুম পড়তে না পড়তে শহরে রাস্তায় রাস্তায় বিক্রি হওয়া শুরু হয়ে যায় এ ভাপা পিঠা। 

এই ভাপা পিঠাও চালের আটা ও খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি করতে হয়। আবার অনেক বিভিন্ন রকম ভাপা পিঠা তৈরির নিয়ম রয়েছে। জায়গা অনুসারে এর বানানোর পদ্ধতি ও আলাদা হয়। আবার জায়গা ভেদে এর নাম আলাদা হয়। তেমনই কাশ্মীরের ভাপা পিঠাটি একটু অন্যরকম ভাবে বানানো হয়। সেটি অনেকটা রাজকীয় ভাপা পিঠার মত। তাই আজকে কাশ্মীরের কিভাবে ভাপা পিঠা বানাতে হয় সেটি জানবো।

ভাপা পিঠা বানাতে কি কি প্রয়োজনঃ

ভাপা পিঠা বানানোর অন্যতম একটি আইটেম হল চালের আটা। চালের আটা ছাড়া ভাপা পিঠা যেন জমে না। তাই সব রকম ভাপা পিঠা তৈরি করতে ভাপা পিঠার প্রয়োজন হয়। এছাড়া অন্য একটি কমন আইটেম হল খেজুরের গুড়। খেজুর দেওয়ার ফলে এর স্বাদ আরো বেড়ে যায়।

সাধারণ ভাপা পিঠা তৈরি করতে হলে সেখানে সাধারণত চালের আটা, খেজুর গুড় ও নারকেল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই কাশ্মীরের ভাপা পিঠায় অন্যান্য কিছু আইটেম ব্যবহার করা হয়। যেগুলো সে ভাপা পিঠা স্বাদকে আরো বাড়িয়ে তোলে। তাই আগে জেনে নেই কাশ্মীরের ভাপা পিঠা বানাতে কি কি প্রয়োজন হয়।

কাশ্মীরের ভাপা পিঠা বানাতে যেসব প্রয়োজন

  • চালের আটা
  • দুধ
  • খেজুরের গুড়
  • লবণ
  • টমেটো
  • নারিকেল কোরা
  • চেরি
  • বাদাম
  • খেজুর
  • লালি গুড়

কাশ্মীরের ভাপা পিঠা তৈরীর নিয়মঃ

আমরা সাধারণত যেভাবে ভাপা পিঠা বানিয়ে থাকি ,সেভাবে এ ভাপা পিঠা বানাতে হবে। এখানে শুধুমাত্র জিনিসের পরিবর্তন হয়েছে। এছাড়া যেভাবেই বাড়িতে ভাপা পিঠা বানানো হয় । সেভাবে বানাতে হবে। একটু বেশি সহজ। অন্যান্য পিঠাগুলোকে তেলে ভাজতে হয় কিংবা আরো ঝামেলা রয়েছে। 

তাই ভাপা পিঠা বানাতে খুব একটা অসুবিধা হয় না। তাই ভাপা পিঠা খুব সহজেই তারা তৈরি করতে পারে। আপনার যখন খেতে মন চাইবে আপনি তখনই তৈরি করতে পারবেন যে, এটি এতটাই সহজ। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা ভাপা পিঠা কিভাবে তৈরি করতে হয় এখনো জানেনা। 

এই পোস্টটি পড়লে খুব সহজে ভাপা পিঠা বানাতে পারবেন। এরপরে আর কোন ঝামেলা হবে না। তাহলে দেরি না করে জেনে নেই কিভাবে কাশ্মীরের ভাপা পিঠা বানাতে হয়। কাশ্মীরের ভাপা পিঠা বানানোর নিয়মঃ

এই ভাপা পিঠা বানাতে হলে প্রথমে একটি বাটিতে দুধ নিতে হবে, এরপর সেখানে লালি গুড় ব্যবহার করতে হবে। লালি গুড় মিশানোর পর সেটিকে ভালো করে মিক্স করতে হবে। মিক্স করে নেওয়া হয়ে গেলে। এবার একটি বাটিতে চালের আটা নিয়ে নিতে হবে। চালের আটা নিয়ে নেওয়ার পর সেই মিক্সারটি এখানে ব্যবহার করতে হবে। ধীরে ধীরে পরিমাণ মতো ব্যবহার করতে হবে। যখন দেখবেন চালের আঠাগুলোকে মুষ্টিবদ্ধ করা যাচ্ছে, তখন আর দেওয়া যাবে না।

এবার এটি কিছুক্ষণের জন্য রেস্টে রেখে দিতে হবে। অন্যদিকে খেজুরর গুড় গুলো ভাঙ্গিয়ে নিতে হবে। এবার এর সাথে নারিকেল করা ব্যবহার করতে হবে। দুটি আইটেমকে একদম ভালোভাবে মিক্স করতে হবে। এবার চালের আটা গুলোকে চেলে নিতে হবে। চেলে নেওয়ার পর , আপনারা যে বাটির আকারে ভাপা পিঠা বানাতে চান সেটি আনতে হবে। এবার সেখানে বাটির অর্ধেক পর্যন্ত চালের আটা গুলো দিয়ে ,সেখানে নারিকেল করা ও খেজুরের গুড় এর মিক্সচারটি দিয়ে দিতে হবে। আবার তার উপরে চালের আটা দিয়ে দিতে হবে।

এরপর সেখানে বাদাম, চেরি ও খেজুর দিয়ে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে খেজুর গুলোকে টুকরো করে নিতে হবে। যেন ভাপা পিঠায়ে ভালো করে দেওয়া যায়। এরপর প্রয়োজন একটি কাপড় কিংবা নেটের। যেটি দিয়ে ভাপা পিঠাটি রাখবেন। এরপর সেই নেটের মধ্যে বাটিটি বসিয়ে দিতে হবে। এরপর যখন ভাপা পিঠাটি সেখানে ভালো করে বসে যাবে। তখন সেটিকে তুলে নিতে হবে।

আর ভাপা পিঠা তৈরি করার জন্য প্রয়োজন হয় গরম পানির ভাপের। তাই একটি ভাপা পিঠা তৈরি করার হাঁড়িতে পানি দিয়ে দিতে হবে। এরপর যখন সেটি গরম হয়ে আসবে। তখন তার ওপরে সে ভাপা পিঠাটি দিয়ে দিতে হবে। এরপর কয়েক মিনিট পর সেটিকে তুলে নিতে হবে। তাহলেই তো এই গরম গরম কাশ্মীরের ভাপা পিঠা। আপনাদের কাছে যদি ভাপা পিঠা তৈরি করা হারি না থাকে। তাহলে একটি স্টিলের ছাঁকনিতে সেটি বসিয়ে দিতে পারেন। একটি প্যানে গরম পানি দিয়ে তারপর সে ছাঁকনিকে ধরে রাখতে হবে যতক্ষণ না ভাপা পিঠাটি হয়ে যায়।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আশা করছি আজকের এই পর্বটি আপনার সম্পন্ন পড়েছেন। তাহলে অবশ্যই আপনি জানতে পেরেছেন কাশ্মীরের ভাপা পিঠা তৈরির ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। আজকের এই পোস্ট পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে শেয়ার করবেন।

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url