কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়

বর্তমান সময়ে দিন দিন শীত আরো বেড়েই চলছে। এ সময়ে বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধো বেড়ে যায়। অনেক সময় হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়। কিন্তু খুব বেশি হাত পা ঠান্ডা হওয়া কি কোন রোগের লক্ষণ। আর যদি রোগের লক্ষণ না হয় তাহলে এত বেশি হাত পা ঠান্ডা হয় কেন। 

এসব হয়তো আপনার জানার ইচ্ছা হয়। কোন রোগের লক্ষণ ছাড়াও হাত বা বেশি ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে। যেমনঃ বেশি বেশি টেনশন করা, ব্লাড প্রেসার কমে যাওয়া এছাড়া আরো বিভিন্ন কারণ রয়েছে।আবার ভিটামিনের অভাবেও এটি হতে পারে।

ভূমিকা

আবার রোগের কারণে কিন্তু হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়। হাইপোথায়ার্জ জনিত রোগের কারণে হাত পা ঠান্ডা হওয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এছাড়া অস্বাভাবিক হারে ওর জন্য বেড়ে যেতে পারে। তাই হাত পা ঠান্ডা হওয়া স্বাভাবিক না হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত।

এছাড়া শীতকাল ছাড়া অন্যান্য ঋতুতেও যদি হাত পা ঠান্ডা বেশি হয়। তাহলে অবশ্যই এটা চিন্তার বিষয়। তাই এগুলো নিয়ে ঘরে বসে থাকা যাবে না। অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। নিচে আরও বিস্তারিত বিষয়ে আলোচনা করা হলো জানতে হলে পুরো  পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

 কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়ঃ

শীত মৌসুম পুরোটাই ঠান্ডা মৌসুম। এ সময় চারিদিকে ঠান্ডা হাওয়া বয়। এ হাওয়া গুলো যখন মানুষের গায়ে লাগে তখন তাদের ঠান্ডা অনুভব হয়। বাইরে ঠান্ডার জন্য মানুষ বাহিরে বের হতে চায় না। সারাদিন ঘরে থাকতে চাই। আর এই ঠান্ডার কারণে মূলত মানুষ দেরিতে ঘুম থেকে উঠে। ঠান্ডা সময় টাই যেন একটা অলসতার সময়। 

শুধু যে মানুষ দেরিতে ঘুম থেকে উঠে তা কিন্তু নয়। আশেপাশের পশুপাখিরাও দেরিতে ঘুম থেকে ওঠে। আপনি খেয়াল করবেন অন্যান্য সময়ে ভোর হতে না হতেই পাখির কিসির মিসির আওয়াজ শোনা যায়। কিন্তু শীতকালে ভোরের দিকে পাখির কিচর মিচির শোনা যায় না। এর কারণ হলো তারাও শীতকালে দেরিতে ঘুম থেকে উঠে।

শীতকালে হাত পা ঠান্ডা হওয়া টা স্বাভাবিক। কিন্তু অনেক বেশি পরিমাণে হাত পা ঠান্ডা হওয়া কিন্তু স্বাভাবিক নয়। এর পেছনে হয়তো কোন কারণ থাকতে পারে। আমাদের শরীরে বেশ কিছু উপাদান রয়েছে। যেগুলো আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে সেই সঙ্গে শরীর গরম রক্ত সাহায্য করে। সেগুলোর অভাবে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আগে থেকে সতর্ক থাকা উচিত। যদি পরিমাণের থেকে খুব বেশি পরিমাণে হাত পা ঠান্ডা হতে দেখা যায়। কিন্তু বসে থাকা যাবে না।

একটি গবেষণায় জানা গেছে যে, হাত-পা বেশি ঠান্ডা হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো শরীরের ভিটামিন বি-টুয়েলভ এর ঘাটতি দেখা দেওয়া। হাত পা ঠান্ডা বেশি হলে বুঝবেন যে আপনার রেভিটামিন বি টুয়েলভ এর ঘাটতি রয়েছে। তাই কেবল শীতের কারণে হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেছে বলে মনে করে বসে থাকলে কিন্তু চলবে না। শরীরে ভিটামিন বি টুয়েলভ এর ঘাটতি দেখা দিলে তা দূর করার জন্য খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার।

যেইগুলো শরীরে ভিটামিন বি ২ এর অভাব পূরণ করে দিবে । এছাড়াও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। ভিটামিন ডি ও শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে। চেষ্টা করবেন শীতকালের দুপুর সময়ে গোসলের পর রোদে গিয়ে বসা। তাহলে হাত পা একটু গরম থাকবেন। কারণ শীতকালে গোসল করার পর আগে তুলনায় হাত-পা অনেক ঠান্ডা হয়ে যায়। শরীরের ঠান্ডাও আরো বেড়ে যায়।

হাত পা ঠান্ডা হয়ে থাকা কি সেটি কোন রোগের লক্ষণঃ

হাত পা বিভিন্ন কারণে ঠান্ডা হতে পারে। বিশেষ করে শীতকালের ঠান্ডা মৌসমের জন্য হাত পা খুব সহজেই ঠান্ডা হয়ে যায়। কারণ আমাদের শরীরের হাত এবং পা কাপড়ের বাইরে থাকে। ফলে হাত পা শরীরের অন্য কোন জায়গার থেকে বেশি ঠান্ডা হয়। কিন্তু যে সবসময় হাত পা ঠান্ডা হয়ে থাকবে তা কিন্তু কোন স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। এর পেছনেও কিছু কারণ রয়েছে। আবার যদি শীত ছাড়া অন্যান্য মৌসুম ও হাত পা ঠান্ডা থাকে এটা কিন্তু ভালো লক্ষণ নয়। হাত বা বিভিন্ন কারণে ঠান্ডা থাকতে পারে যেমনঃ ব্লাড প্রেসার কম থাকার কারণে, অতিরিক্ত টেনশনের কারণেও হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায় এছাড়াও আরো বিভিন্ন কারণ রয়েছে।

যদি হাত কিংবা পা দুটোই না ঠান্ডা হয়ে কোন একটি যদি ঠান্ডা হয়ে থাকে। তাহলে অবশ্যই এটি চিন্তার বিষয়। এটি কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে। আমাদের সারা শরীরের রক্ত চলাচল করে। কোন কারণে যদি রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায় তাহলে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়। হাইপোথাইরয়েড জনিত রোগের কারণে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়। সেসঙ্গে ওজনও বেড়ে যায়। এ রোগের কারণে শীতকালে পরিমাণের তুলনায় অনেক বেশি হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়।

এছাড়াও আরো কিছু কিছু হরমোনগত সমস্যার কারণে হতে পারে। আপনার হাত পা যদি অস্বাভাবিকভাবে ঠান্ডা থাকে তাহলে কোন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। কারণ এসব ব্যাপারে ঘরে বসে থাকতে নেই। এ থেকে হিতে বিপরীত হতে পারে।চিকিৎসকের কাছে যান , তাহলে আপনার কথাগুলো শুনে আপনাকে কোন টেস্ট দিতে পারে। সেখান থেকে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার কোন ধরনের রোগ হয়েছে নাকি হয়নি। তাই অবশ্যই হাত পা ঠান্ডা বেশি হওয়ার লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের নিকটবর্তী হওয়া উচিত।

হাত-পা গরম রাখার জন্য কিছু খাবারঃ

জলবায়ু কত পরিবর্তনের কারণে কোন বছরে কম শীত পরছে আবার কোন বছরে খুব বেশি শীত পড়ছে। বর্তমানে সে ধীরে ধীরে আরো বাড়ছে। শীতকালের এই ঠান্ডা মৌসমের জন্য হতে পারে বিভিন্ন ধরনের রোগ। আবার ঠান্ডার জন্য তো বিভিন্ন রোগও হতে পারে। তাই শীতকালে এই শিত থেকে বাঁচতে হলে বেশ কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

 গরম কাপড় পরার পাশাপাশি এই খাবারগুলো খেলে আমাদের শরীর গরম থাকবে। আর বিভিন্ন রোগের হাত থেকে বাঁচা যাবে। আমাদের শরীর সুস্থ থাকার অনেকটাই নির্ভর করে সঠিক খাবারের উপরে। যদি সঠিকভাবে খাবার খাওয়া যায় তাহলে শরীর সুস্থ থাকবে। সে কারণে শীতকালে সুস্থ সবল থাকতে প্রয়োজন সঠিক খাবারের। তাহলে জেনে নিয়ে শীতকালে কোন কোন খাবারগুলো আমাদের শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

হাত-পা গরম রাখতে মধুর ভূমিকা

মধুতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেল রয়েছে। যা আমাদের ইমিউনিটি বজায় রাখতে সাহায্য করে। শরীরে তাপ উৎপাদনে সাহায্য করে। আবার ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন রোগের হাত থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে।

শীতকালে তুলসী ও আধার ভূমিকা

শীতকালে তুলসী পাতা যুক্ত চায়ের স্বাদই আলাদা। এছাড়াও আদা ও তুলসে ছাড়া  থার্মো জেনেসিস  প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করে। এছাড়াও আদা ও তুলসী হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। এছাড়া শরীরের উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে।

 ঘি

ঘি খেলে রক্তে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। যা হার্টকে সুস্থ রাখে। দৈহিক তাপমাত্রা বজায় রাখলে সাহায্য করে। প্রতিদিনই ভাতের সঙ্গে ঘি খেতে পারলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং দেহের হাড় গুলো শক্ত হয়।

শীতের সুস্থতায় ভেজিটেবল সুপ

মিনারেল ভিটামিন সমৃদ্ধ এই সুপ । যেকোনো সুপ কিন্তু শীতের সন্ধায় খাওয়া যেতে পারে। এগুলো শরীরের জন্য অনেক উপকারে। সে কারণে রোগীদেরও সুপ খাওয়ানো হয়। এটি শরীর গরম রাখতেও সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন নিয়ম করে ভেজিটেবল সুপ খাওয়া উচিত তাহলে শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে।

শরীর গরম রাখতে ডিমের ভূমিকা

ডিম কে বলা হয় পুষ্টির পাওয়ার হাউস। ভিটামিন মিনারেল সমৃদ্ধ এই খাবারটি শরিরকে গরম রাখতে অনেক সাহায্য করে। একদিকে যেমন দেহের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তেমনি ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই শীতকালের প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়া উচিত।

৬।বাদাম

শীতে শরীর গরম রাখতে বাদাম অনেক সাহায্য করে। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ও শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে এসব খাবার। এটির শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতেও সাহায্য করে।

৭। খেজুর

শীতকালের প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা হলেও কিন্তু কমে যায় । তাই সে সময়ে খেজুর শরীরের জন্য অনেক উপকারে। এছাড়াও এটি শীতকালে শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

৮। মসলাদার খাবার

মসলাদার খাবার শরীরকে গরম রাখতে অনেক সাহায্য করে। কিন্তু মনে রাখতে হবে অনেক বেশি মসলাদার খাবার কিন্তু শরীরের জন্য কখনোই ভালো নয়। তাই মসলাদার খাবার খাওয়ার পর অবশ্যই পরিমাণমতো পানি খেতে হবে।

৯। ঝাল যুক্ত খাবার

ঝাল যুক্ত খাবার শরীরে গরম রাখার অন্য একটি মাধ্যম। শরীরকে গরম রাখতে হলে ঝাল খাবার অনেক সাহায্য করে। তাই শরীর গরম রাখতে হলে আপনারা খাবারের ঝাল বেশি দিয়ে খেতে পারেন।

১০। গরু অথবা খাসির মাংস

গরু অথবা খাসির মাংস শরীরকে গরম রাখতে অনেক সাহায্য করে। কিন্তু খুব বেশি পরিমাণে খাওয়া ভালো নই। পরিমাণ মতো খেতে হবে যেটি আপনার শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করবে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আশা করছি আজকের এই পর্বটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। এবং জানতে পেরেছেন কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়। আজকের এই পর্বটি যদি আপনার কোন উপকারে লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে শেয়ার করবেন।

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url