ভিটামিন এ ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও অপকারিতা

আজকাল প্রায় সবারই চোখের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। চোখের সমস্যার কারণে আরো বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয়। যেমনঃ মাথাব্যথা, মাথা ঘুরে যাওয়া আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখের দৃষ্টিশক্তিও কমে যায়। 

আর চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ভিটামিন এ আমাদের অনেক সাহায্য করে। চোখের সমস্যা সমাধানের ভিটামিন এজন্য অনেক জনপ্রিয়। তাই আমরা আজকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল এর উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে জেনে রাখব।

ভূমিকা

এছাড়াও ভিটামিন এ এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে শরীরে কাজ করে। এন্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়াতে সাহায্য করে। বিভিন্ন ধরনের রোগের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। তাই ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা প্রয়োজন। তাহলে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে সহজেই রক্ষা পাওয়া যাবে। বিভিন্ন রোগের সংক্রমনের হাত থেকেও বাঁচা যাবে।

ভিটামিন এ যুক্ত খাবারঃ

আমরা হয়তো প্রায় সবাই ভিটামিন এ এর গুন সম্পর্কে জানি। এর অন্যান্য গুণের মধ্যে একটি বিশেষ গুণ হল দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে ভিটামিন এ অনেক সাহায্য করে। আমাদের শরীরে তিন ধরনের ভিটামিন উপাদান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে । সেগুলো হলোঃ ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই। এগুলোর মধ্যে ভিটামিন এ রয়েছে। অর্থাৎ এ থেকে বোঝা যায় ভিটামিন এ আমাদের শরীরে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি হৃদরোগ ও ক্যান্সার থেকে বাঁচতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরে এক ধরনের ফ্রি রেডিকাস রয়েছে। এগুলো আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। এগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতো এন্টিঅক্সিডেন্ট অনেক সাহায্য করে। আর এ কারণে ভিটামিন এ আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। ভিটামিন এ আমরা বিভিন্ন খাবার থেকে পেয়ে থাকি। তাই সে খাবারগুলোর নাম জেনে রাখা প্রয়োজন।

ভিটামিন এর সমৃদ্ধ ফলঃ

  • গরু ও খাসির কলিজা
  • আম
  • অলিভ অয়েল
  • মাখন
  • সামুদ্রিক মাছের ডিম
  • পনির
  • গাজর
  • মিষ্টি কুমড়া 
  • পেয়ারা
  • পেঁপে
  • লালমরিচ
  • মিষ্টি আলু
  • সেলমন ফিস 
  • ঘি
  • কচু শাক

ভিটামিন এ এর উপকারিতাঃ

ভিটামিন এ এমন একটি পুষ্টি উপাদান  যা আমাদের চোখে ভালো রাখার পাশাপাশি । শরীরের আরও কিছু সমস্যার সমাধান করে। তাই ভিটামিন এ কে এক ধরনের ওষুধ হিসেবে ধরা হয়। কারণ ভিটামিন এ বিভিন্ন রোগের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। যা অন্যান্য সব ভিটামিন পারে না। তাই ভিটামিন আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে।

চোখের সমস্যা দূর করে

আজকাল প্রায় সবারই চোখের সমস্যা দেখা যায়। চোখে কম দেখা, ঝাপসা দেখা, দূরের কোন কিছুকে স্পষ্টভাবে না দেখা ইত্যাদি অনেক সমস্যা প্রায়ই লেগেই থাকে। আর সবচেয়ে বড় কথা হল রাতকানা রোগ । বর্তমানে এই রোগটি একটু বেশি দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও চোখের আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে ভিটামিন এ অনেক সাহায্য করে।

চোখের একটু সমস্যা দেখা গেলেই বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন ভিটামিন এর সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার। আর যদি ভিটামিন এই সময় খাবার নাও খেতে পারেন তাহলেও ভিটামিন এ ক্যাপসুল অবশ্যই খেতে হবে। কালকে চোখের সমস্যার সমাধানে রয়েছে ভিটামিন এ। তাই চোখের সমস্যার জন্য ভিটামিন এ অনেক উপকারী।

এছাড়াও অনেকেরই বয়স বা সঙ্গে সঙ্গে চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। চোখে ব্যথা করা, চোখে ঘোলা দেখা এছাড়াও আরো অনেক সমস্যা দেখা দেয়। তাদের জন্য অনেক উপকারী। এটি তাদের চোখের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি । চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

ভিটামিন এ শরীরে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। আমরা অবশ্যই জানি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলো আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নাই রোগ প্রতিরোধ করত সাহায্য করে।

বিভিন্ন ধরনের রোগের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অনেক উপকারি। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

শিশুর সুস্থ থাকার জন্য

শিশুর সুস্থ থাকার জন্য ভিটামিন এ অনেক উপকার করে। ভিটামিন এ যেমন চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো। তেমনি শিশুর স্বাভাবিক বিকাশেও অনেক সাহায্য করে। তাই ভিটামিন এ শিশুর জন্য অনেক উপকারী। এটি শিশুর শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

আমরা হয়তো জানি রোগের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়। তাই শিশুর ও বিভিন্ন রোগের আশঙ্কা থাকতে পারে। আর এ কারণে মূলত ভিটামিন এ শিশুর জন্য অনেক উপকারি।

ক্যান্সার প্রতিরোধ

মানবদেহের বিভিন্ন ফ্রি রেডিকেল রয়েছে। এগুলো আমাদের জন্য ক্ষতিকারক। কারণ এগুলো বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে। তেমনি ফ্রি ‍যারডিকেল শরীরে ক্যান্সার কোষ সৃষ্টি করতে সাহায্য করে। আমরা আগে থেকে জানি যে আমাদের শরীরের খারাপ ব্যাকটেরিয়া গুলো নির্মম করতে সাহায্য করে। তেমনি ফ্রি রেডিকেলগুলো নির্ভর করত সাহায্য করে।

ফলে এগুলো ক্যান্সার কোষ তৈরি করতে পারেনা। তাই ক্যান্সার প্রতিরোধেও অ্যাক্সিডেন্ট আমাদের সাহায্য করে। আর ভিটামিন এ আমাদের শরীরে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। তাই ভিটামিন এও আমাদের শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধের সাহায্য করে। ক্যান্সারের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই ভিটামিন এ যুক্ত খাবার খেতে হবে।

শুষ্ক ত্বক

ভিটামিন এ যেমন আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে । তেমনি আমাদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যাও দূর করে। আজকাল শুষ্কত্বকের সমস্যা প্রায় সবারই রয়েছে। ভিটামিন এ শুষ্ক ত্বকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করেন। শুষ্ক ত্বকের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি , ত্বকের বিভিন্ন বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে।

আমাদের ত্বকে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া রয়েছে । যা আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ক্ষতি সাধন করে থাকে। ভিটামিন এ যেহেতু এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। তাই এটি ত্বকের ব্যাকটেরিয়া গুলো দূর করতো সাহায্য করে। ফলে আমাদের ত্বক সুস্থ থাকে।কাজেই ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে অবশ্যই আমাদের ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।

রক্তস্বল্পতা কমায়

ভিটামিন এ মানব দেহের রক্তস্বল্পতা পাওয়াতে সাহায্য করে। রক্তস্বল্পতো কমানোর পাশাপাশি শ্বেত রক্তকণিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করে। এছাড়াও হারের পূনির্মাণেও অনেক সাহায্য করে। শ্বেত রক্তকণিকা বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া নির্ভর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও দেহের প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করে।

তাই রক্তের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতেও ভিটামিন এ অনেক উপকারি। সেই সঙ্গে এটা হাড়ের জন্য অনেক উপকারী।

ভিটামিন এ এর অপকারিতা

প্রত্যেকটা জিনিসেরই একটা নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে। নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি যদি হয়ে যায় তাহলে সেটি বিপদজনক। ভিটামিন এ যেমন আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি। তেমনি আবার এর বেশি প্রভাবের ফলেও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভিটামিনের একটি ট্রাক্সিক মাত্রা রয়েছে। যদি এটি অতিক্রম হয়ে যায় তাহলে স্বাস্থ্যের পক্ষে সেটি মোটেও ভালো নয়।

ভিটামিন এ এর বেশি প্রভাব গর্ভবতী নারীদের জন্য বেশি ক্ষতিকারক। ভিটামিন এ যেমন শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে সাহায্য করে। আবার দৃষ্টি শক্তি ভালো লাগতো সাহায্য করে। তেমনি এর বেশি প্রভাবের ফলে শিশুর জন্ম কত বিভিন্ন সমস্যা হয়ে যেতে পারে।

আবার বেশি ভিটামিন এ খাওয়ার ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণও দেখা যায়। যেমনঃ বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা, ত্বকের সমস্যা ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ভিটামিন এ পরিমাণমতো খাওয়া প্রয়োজন। তাহলে ভিটামিনের উপকারিতা গুলো পাওয়া যাবে। এতে কোন ক্ষতির কারো প্রভাব পড়বে না।

শেষ কথা

ভিটামিন এ ক্যাপসুলগুলি মৌলিকভাবে ভিটামিন এ সরবরাহ করে, যা শরীরের বিভিন্ন কাজে গুরুত্বপূর্ণ। এটি স্বাস্থ্যকর চোখ, ত্বক, এবং মাংসপেশী উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। ভিটামিন এ শরীরে রক্তপ্রবাহ ও হাড়-দন্ত স্বাস্থ্যেও মাধ্যমিক ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া, এটি অনুপযোগী শক্তি সরবরাহ করতে সাহায্য করতে পারে এবং রক্তশোকের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করতে পারে। তবে, কোনো সাপ্লিমেন্ট নিয়ে কোনো নির্ভরশীলতা থাকতে পারে, এবং ডাক্তারের পরামর্শের জন্য সাবধানতা অবলম্বন করা গুরুত্বপূর্ণ।
পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url