তুলসী পাতা হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে

ছোটবেলায় প্রায় সকলেই এই তুলসী পাতা একবার না একবার খেয়ে দেখেছেন। ছোটবেলায় একটু ঠান্ডার আভাস লাগলে মায়েরা তুলসী পাতার রস খাওয়াতো। যেটাতে খুব সহজে ঠান্ডা জনিত রোগ গুলো সেরে যায়। বড় হওয়ার পর জানতে পারে যে, এই পাতা যে শুধু ঠান্ডা জনিত রোগ ভালো করে তা কিন্তু নয়। আরো বিভিন্ন ধরনের রোগ ভালো করতে সাহায্য করে তুলসী পাতা।

তুলসী পাতা হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে

একেক জন একেক রকম ভাবে ব্যবহার করে এই তুলসী পাতার। ব্যবহার করার পাশাপাশি এর উপকারিতা গুলোও পেয়েছেন। এসব কারণে এই তুলসী পাতাটি অনেক জনপ্রিয় একটি ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত। এমন কি এই গুণগুলো গবেষণায়ও জানা গেছে। বর্তমানে এই তুলসী পাতা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ তৈরি করা হচ্ছে।

তুলসী পাতা হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে

হৃদপিণ্ড আমাদের শরীরে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। হৃদপিণ্ড আমাদের সারা শরীরের রক্ত সঞ্চালন করে দিতে সাহায্য করে। আর রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে আমাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে অক্সিজেন পৌঁছায়। আর এর রক্ত সঞ্চালন যদি ঠিকমতো না হয়, তাহলে শরীরে অক্সিজেন ও ভালো করে পৌঁছাবে না এবং শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগে বাসা বাঁধবে। 

শুধু যে বিভিন্ন ধরনের রোগের বাসা বাঁধ পেয়ে তা কিন্তু নয়। বরং যে স্থান থেকে রক্ত সঞ্চরণ হয় সে স্থানও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর এ রক্ত সঞ্চালনের বাধা দেয়ার কাজ করে খারাপ খারাপ কোলেস্টেরল। এই তোর সাথে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো শরীরে খারাপ কোলেস্টের ও কমাতে সাহায্য করে এবং শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্র বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের আশঙ্কাও কমে যায় এবং হার্ট সুস্থ থাকে।

তুলসী পাতার উপকারিতাঃ

তুলসী পাতার বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। এটি গবেষণাও জানা গেছে। গবেষণা করে জানার পর এগুলোকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। তাই তুলসী পাতা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। অনেক সময় আগে থেকেও এর ওষুধে ব্যবহার চলে আসছে। তাই এটি আমাদের জন্য অনেক উপকারী একটি জিনস।

তুলসী পাতা সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে। এক হল সবুজ তুলসী, দ্বিতীয়টি বেগুনি রংয়ের তুলসি এবং তৃতীয়টি হল জঙ্গলে যেসব তুলসী পাওয়া যায় সেগুলো। একেক ধরনের একেক গুন রয়েছে। তবে সবুজ তুলসীটি অনেক পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। 

আর এটিকে মূলত সকলের চেনে এবং এটি ব্যবহার করেছেন।  এমন অনেকেই তুলসী পাতা ব্যবহার করেছেন কিন্তু এর সব উপকারিতা সম্পর্কে এখনো জানেন নাচলুন জেনে নিন এর কিছু উপকারিতা সম্পর্কে।

ঠান্ডা জনিত রোগ ভালো করতে সাহায্য করেঃ

ঠান্ডার জন্যই তো সমস্যা দূর করার জন্য অনেক কাল আগে থেকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধে গাছ ব্যবহার করা হতো। তেমনি এক ধরনের ওষুধে কাজ হল এই তুলসী পাতা। তুলসী পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। আমরা হয়তো সকলেই জানি যে এন্ড্রক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। 

আর আমাদের ঠান্ডা রোগ হয় মূলত এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া কারণেই। তাই এ তুলসী পাতা সে ব্যাকটেরিয়া গুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে অনেক সাহায্য করে। এ কারণে মূলত তুলসী পাতা ঠান্ডা জনিত রোগের জন্য অনেক উপকারি। শুধু গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে তা নয়। এমন অনেক মা এর উপকারিতা সম্পর্কে জানেন।

ইনসুলিনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করেঃ

তুলসী পাতা ইনসুলিন উৎপাদনে কাজ করে থাকে। তাই যাদের ইনসুলিন এর সমস্যা রয়েছে তারা তুলসী পাতা নিয়মিতভাবে খেতে পারেন। এতে করে তাদের ইন্সুলিনের যেকোনো ধরনের সমস্যা খুব সহজে দূর হয়ে যাবে। ইনসুলিন এর সমস্যা হয় বেশিরভাগ ডাইবেটিস রোগীদের। 

তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্যও অনেক উপকারী। তুলসী শরীরে এক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের মত কাজ করে। তাই এটি শরীরের আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে। যদি ইনসুলিনের সমস্যা থাকে সমস্যা থাকে তাহলে, নিয়মিতভাবে তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস করুন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করেঃ

তুলসী পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়া, এন্ড টি ইনফ্লামেটরি প্রপারি এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। এগুলো আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও যে কোন ধরনের ব্যথা দূর করতো তুলসী পাতা অনেক উপকারি। 

রাতে ঘুমানোর পর সকালে বিভিন্ন ধরনের ব্যথা অনুভব করেন। এ ধরনের সমস্যা দূর করতে তুলসী পাতা অনেক সাহায্য করে। যে কোন অসুখের জন্য শরীরে এক ধরনের অস্বস্তি সৃষ্টি হয়, এটি দূর করতেও তুলসী পাতাঅনেক সাহায্য করে।

কিডনি স্টনের সমস্যা ভালো করেলঃ

তুলসী পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যাসিটিক অ্যাসিড। তাই আপনার  কিডনিতে পাথরের অর্থাৎ স্টনের কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে, তুলসী পাতা আপনার জন্য অনেক উপকারে একটি জিনিস। এই এসিটিক এসিড কিডনি স্টোনকে ব্রেকডাউন করতে সাহায্য করে। কিছুদিনের মধ্যে ইউরোনের সাথে সেই স্টনটি খুব সহজেই বের হয়ে আসে। 

এছাড়াও আপনি যদি নিয়মিতভাবে তুলসী পাতা খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার শরীরের ইউরিক এসিডের পরিমাণ কমিয়ে দিতে সাহায্য করবে। আর এই ইউরিক এসিডের মাত্রা মেন্টেন থাকলে কিডনি স্টোন এর মত সমস্যা থেকেও দূরে থাকা যায়। তাই যাদের কিডনিতে স্টোন হয়নি তারাও কিন্তু তুলসী পাতা খেয়ে এর ঝুঁকি কমাতে পারবেন। এমনকি গবেষণা জানা গেছে যে আপনি টানা ছয় মাস তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস করলে,কিডনি স্টনের সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে।

ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করেঃ

তুলসী পাতা ইন্সুলিনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও তুলসী পাতা শরীরে ইনসুলিন তৈরি করতেও পারে। তাই শরীরে ইনসুলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ব্লাড প্রেসার এমনিতে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। ব্লাড প্রেসারের সমস্যা হয় মূলত ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়াবেটিস হওয়ার লক্ষণ রয়েছে। 

তাই নিয়মিতভাবে যদি তুলসী পাতা খাওয়া যায় তাহলে ব্লাড প্রেসারের সমস্যা কমে যাবে এবং ডায়াবেটিস কেউ নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। আবার তাদের এখনো ডায়াবেটিস হয়নি তারাও তুলসী পাতা খেয়ে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে পারবেন।

শিশুদের যেকোনো ধরনের সমস্যা দূর করতে অনেক সাহায্য করেঃ

তুলসী পাতা যে শুধু ঠান্ডা জনিত রোগ ভালো করতে সাহায্য করে তা কিন্তু নয়। বরং এটি পেট ব্যাথা থেকে শুরু করে শিশু যে কোন ধরনের সমস্যা দূর করতে অনেক সাহায্য করে। তাই তুলসী পাতা বাচ্চাদের জন্য অনেক উপকারী একটি জিনিস। তুলসী পাতা যদি বাচ্চাদের নিয়মিতভাবে খাওয়ানো হয়। তাহলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি পাবে। 

এমন অনেক বাচ্চা আছে যাদের কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন ধরনের রোগের দেখা দেয়। এটি তাদের জন্য আরো বেশি উপকারী। কারণ শিশু বয়স থেকে বাচ্চাদের পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। আর সে খাবার খাওয়ানো অনুযায়ী সে বাচ্চা ধীরে ধীরে বেড়ে উঠবে। শিশু সময়ের প্রত্যেকটি বাচ্চাকেই তুলসী পাতা খাওয়ানো উচিত।

তুলসী পাতার বিশেষ কিছু ব্যবহারঃ

অনেকে বিভিন্ন রোগের সমস্যা দূর করা যায় তুলসী পাতা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করে থাকেন। ব্যবহার করার পাশাপাশি এর উপকার গুলোও পান। কিন্তু আবার অনেকেই আছে যারা এসব ব্যবহার সম্পর্কে জানেন না। তাই তুলসী পাতার উপকার যে পেতে গেলে এসব ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলে চলুন জেনে তুলসী পাতার কিছু ব্যবহার।

  • তুলসী পাতার রস বের করে, সেটিকে গরম করে মধুর সাথে খেলে ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
  • প্রতিদিন সকালে তুলসী পাতা কাঁচা চিবিয়ে খেলেও ঠান্ডা জনিত রোগের সমস্যা দূর হয়।
  • সিজন চেঞ্জ হওয়ার সাথে সাথে অনেকেই গলায় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়। গলায় এ ধরনের সমস্যা দূর করতে কয়েকটি তুলসী পাতা পানির সাথে গরম করে ফোটাতে হবে। এরপর এটিকের দিনে দুইবার করে খেলে গলার এ ধরনের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
  • যাদের শরীরেরও প্রধান ক্ষমতা বাড়াতে চান তাহলে তারা তুলসী পাতার চা খেতে পারেন। এটি করতে দুই কাপ পানি দিয়ে কয়েক তুলসী পাতা ফোটাতে হবে। ততক্ষণ  ফুটাতে হবে যতক্ষণ না দুই কাপ পানি এক কাপে পরিণত হয়। এরপর এটিকে চায়ের মত গরম গরম খেয়ে নিতে হবে।
  • শিশুদের যেকোন সমস্যার জন্য তুলসী পাতা একমাত্র সমাধান। এজন্য কোন ধরনের সমস্যায় তুলসী পাতার রস খাওয়াতে পারেন। যেমনঃ পেট ব্যথা, ঠান্ডা জনিত রোগ এ ছাড়া আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যার জন্য তুলসী পাতা খাওয়ানো যেতে পারে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে লাগবে. আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি ঘরে বসে ঠান্ডা জনিত রোগে কিভাবে তুলসী পাতা ব্যবহার করতে হয় আপনি জেনে গেছেন। আজকের আর্টিকেল থেকে যদি আপনি কোন ভাবে উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url